৫ মার্চ মেদিনীপুর কলেজ ময়দানে সরকারি পরিষেবা প্রদানের মঞ্চ থেকে রেলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন খড়্গপুর শহরে রেল এলাকায় উচ্ছেদ হলে তিনি ছেড়ে কথা বলবেন না। সেইমতো দলের নেতা দের বিষয়টি মাথায় রাখতে বলেন।
মঙ্গলবার খড়্গপুরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে থাকা রেল কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযান চালায় রেল কর্তৃপক্ষ । রেল কর্মীরা ও রেল পুলিশ জোর করে কয়েকটি বাড়ি ভেঙে দেন । খবর পাওয়া মাত্র সেখানে দলের কর্মীদের নিয়ে পৌঁছে যান খড়গপুর পৌর সভার প্রাক্তন পৌরপ্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা প্রদীপ সরকার। তাঁরা ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ দেখান। রেল পুলিশ ও রেল আধিকারিক দের সঙ্গে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের বচসা বেধে যায়।
তাঁরা জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী বলে গেছেন কোনো ভাবেই রেল কলোনি এলাকায় কোনো গরিব পরিবারের মানুষকে উচ্ছেদ করা যাবে না। রেল কর্মীরা জানান , ভগ্ন প্রায় কয়েকটি বাড়ি ভাঙার নির্দেশ আগেই জারি করা হয়েছে । সেগুলি তাঁরা ভেঙে সরিয়ে দিচ্ছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীর সমর্থনে ব্যানার , ফ্লেক্স লাগালে সেসব রেল পুলিশ ছিঁড়ে খুলে দিচ্ছে। আর বিজেপি প্রার্থীর লাগানো ফ্লেক্স , ব্যানার খুলছে না।
এদিন তাঁরা দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়গপুর বিভাগের ডি আর এম কার্যালয়ে গিয়ে এবিষয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখার আবেদন করেছেন।
৫ মার্চের সভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন , নির্বাচন আসলেই খড়্গপুরের রেল এলাকায় থাকা কলোনি গুলোতে বসবাসকারী মানুষের ওপর নির্যাতন চালায় রেল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের উচ্ছেদ করা হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়। পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর বিজেপির প্রার্থী কে ভোট দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। বিজেপি কে ভোট না দিলে তাঁদের উচ্ছেদ করা হয়। খড়গপুর পৌর এলাকার ৮ টি ওয়ার্ডে রয়েছে রেল কলোনী। কয়েক দশক ধরে বহু মানুষ বসবাস করে আসছেন এসব কলোনীতে। তবে মাঝেমধ্যেই রেল পুলিশের নানা রকম অত্যাচার সহ্য করতে হয় তাঁদের।
এদিন প্রদীপ সরকার সহ তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা রুখে দাঁড়ানোর ফলে উচ্ছেদের কাজ স্থগিত রাখা হয়।
প্রদীপ বাবু জানান , মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে তাঁরা রেলের এই উচ্ছেদের কাজে বাধা দিয়েছেন। তিনি জানান , এখন পুরো বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন রয়েছে। সেসব তোয়াক্কা না করে রেল কিভাবে এই উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারে সেই কৈফিয়ত তাঁরা চেয়েছেন।
তাঁরা আবার করতে পারে। তাই দলের নেতা কর্মীদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। এবার থেকে পুনর্বাসন না দিয়ে যেখানেই রেল উচ্ছেদ অভিযান চালালে সেখানেই তাঁরা পৌঁছে বাধা দেবেন।