সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
ভারত মার্কিন যৌথ উদ্যোগে কলকাতায় সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্টের পরে এবার আসছে আরও এক বিপুল বিনিয়োগ।
বাংলায় গড়ে উঠবে নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র। তাতে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা তো মিটবেই। উলটে অন্য রাজ্যকেও দেওয়া যাবে। তাছাড়া নতুন শিল্প গড়ে উঠতে চলেছে বাংলায়। সেখানেও বাড়তি বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন পাওয়ার প্ল্যান্টের অনুমোদন করেছে রাজ্য মন্ত্রিসভা।
সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক হল নবান্নে। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে যে মন্ত্রীদের রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি, পুজোর সময়ে তাঁদের বন্যা দুর্গতদের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর যে মন্ত্রীদের জেলায় বন্যা পরিস্থিতি নেই, তাঁদের ত্রাণ পাঠাতে বলেছেন।
সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করে সে কথা জানালেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সুপার ক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্ল্যান্ট গড়ে তোলা হচ্ছে। অল্প কয়লায় বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে এই পাওয়ার প্ল্যান্টে।
এদিকে আরও চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি হবে বাংলায়। তার মধ্যে একটি তৈরি হবে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ বা পিপিপি মডেলে। আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দুর্গাপুজোর সময় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে আরও খানিকটা। রাজ্যে শিল্প খাতেও বিদ্যুতের খরচ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে আরও বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। এখন সাগরদিঘি, বক্রেশ্বর, দুর্গাপুর, সাঁওতালডিহি, ব্যান্ডেল ও কোলাঘাটে সক্রিয় বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এই ৫টি পাওয়ার প্ল্যান্টের পাশাপাশি আরও চারটি পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি হবে। তার মধ্যে একটি হবে পিপিপি মডেলে।
এই বিষয়ে অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘”পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি হবে ১৬০০ (৮০০+৮০০) মেগাওয়াটের। মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, গ্লোবাল টেন্ডারের মাধ্যমে বেসরকারি সংস্থা নির্বাচন করা হবে। তার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে (পিপিপি) এই পাওয়ার প্ল্যান্টের পরিকাঠামো তৈরি হবে। টেন্ডার হওয়ার পরে নির্বাচিত সংস্থা যেখানে চাইবে সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জমি দেওয়া হবে।”
এছাড়া পূর্ব ভারতে কারও কাছে এই পাওয়ার প্ল্যাট নেই। যা অত্যাধুনিক। এটাকে বলা হচ্ছে, “সুপার ক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্ল্যান্ট।” এনটিপিসি, ডিভিসি কারও কাছে তা নেই। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীর বক্তব্য, “রাজ্য সরকার সাগরদিঘিতে একটি নিজস্ব পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করেছে। সেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৯৫ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সুপার ক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্ল্যান্ট গোত্রের।
এই ধরনের প্ল্যান্ট দেশের পূর্বাঞ্চলে এই প্রথম। এখানে সবটাই রাজ্যের অর্থে গড়ে উঠবে। কারও কোনও টাকা নেই। এটি সম্পন্ন হলে রাজ্যের চাহিদা মিটিয়ে ভিন রাজ্যেও বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে রাজ্য সরকার। তার জেরে রাজ্যের কোষাগারে ঢুকবে মোটা অঙ্কের টাকা। আগামী দিনে যাতে রাজ্যে বিদ্যুতের কোনও সমস্যা না হয়, সেটা মাথায় রেখেই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলির আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে।”