রাহুল সিংহ মজুমদার। কলকাতা সারাদিন।
ফাইয়াজ ইসলাম ফাহিম বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় জনপ্রিয় ব্লগার। ব্লগে তার কোটি পাঠক ছাড়িয়ে গেছে। যৌবনের কবি হিসাবে তিনি সমাদৃত। তার কবিতায় নতুনত্ব আছে বলে অনেক কবি মনে করেন। নেট দুনিয়ায় তার কবিতা রীতিমতো ভাইরাল। রিলসে,ক্যাপশনে,পোস্টে,প্রবন্ধে,গানে হাজার হাজার মানুষ তার কবিতা ব্যবহার করেন। এবার তিনি চটেছেন অগ্নিমিত্রা পালের বিরুদ্ধে। তিনি অভিযোগ করেন অগ্নিমিত্রা পাল তার কবিতা ফেসবুকে পোস্ট করেছে নাম না দিয়ে।
তার লিখনি স্বত্ব লোপ পেয়েছে তাই রাখঢাক না করে অগ্নিমিত্রা পালের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করলেন….
এই প্রসঙ্গে নিজের অভিযোগ করার কারণ স্পষ্ট ব্যাখ্যা করে কলকাতা সারাদিন -কে ফাইয়াজ ইসলাম ফাহিম জানিয়েছেন, “কবিতার জন্য নিজের ভবিষ্যত শেষ করেছি বলতে পারেন। আমার আর্মির চাকুরী হতো,বিজিবির চাকুরী হতো,পুলিশের চাকুরী হতো গ্রামের মানুষ, বন্ধু-বান্ধবী বলাবলি করতো। কিন্তু,আমি কখনো চাকুরি করার পক্ষে না।সরকারি-বেসরকারি যে কোন চাকুরি হোক।আজ অবধি কোন চাকুরি’র জন্য চেষ্ঠা করিনি বা আবেদন করিনি। কারণ,আমি যে স্বাধীনতা চাইবো কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দিতে অক্ষম। নিজের স্বাধীনতা কে সবসময় গুরুত্ব দিয়েছি।চাকুরি কে দাসত্ব মনে হয়।
আমি কবিতার প্রতি এ্যাত্তটা মগ্ন ছিলাম যা কহতব্য নয়।ক্লাস সেভেন-এইট থেকে কবিতার প্রতি টান ক্রমশই বেড়ে যায়।
হাই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা কবি বলে কটাক্ষ করতো আবার ভীষণ আদর করতো।
যখন কলেজে পড়ি তখন আমার লিখনির প্রতি যত্নশীল হয় বাংলা বিভাগের দুু’জন শিক্ষক বাবুল স্যার, জেসমিন ম্যাম।তাদের অবদান কখনো ভুলবো না।তারা সবসময় অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে ২০০-২৫০ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সব থেকে আমাকে বেশি ভালবাসতেন। বান্ধবী রিমু’র কথা আজও মনে পড়ে “মাথায় হাত বুলিয়ে ” বলেছিল চুল একটু সাইজ করে নেস হেব্বি লাগবে।
যখন ধামরাই সরকারি কলেজে (ঢাকা)অর্নাসে অধ্যয়নরত তখন আলোকবর্তিকা হয়ে দাঁড়ায় বান্ধবী তাহমিনা। সে সবসময় আমাকে ফুল সাপোর্ট করতো। বান্ধবীকে প্রচন্ড মিস করতেছি। কিন্তু এখন খুঁজেই পাচ্ছি না, দৈবাৎ ছন্দপতন হওয়ার পর থেকে।
প্রথম প্রেমিকা আলেকজান (কবিতা) ইঞ্জিনিয়ার ছিল। সে প্রচন্ড ভালোবাসতো আমিও ভালবাসতাম কিন্তু সে ছিল আমার থেক বড়।সে বিবাহের আহ্বান করেছিল কিন্তু কেন জানি আমি প্রত্যাখান করলাম,কারণ আমি তখন বিবাহযোগ্য ছিলাম না।আজও মনে হয় গাজীপুর জেলা প্রসাশক কার্যালয়ের বাইরের বিশ্রামাগারে ( ভাওয়াল রাজবাড়ী)বসে আড্ডা দেওয়ার কথা,তার আলতো করে গাল টেনে দেওয়া কথা শরীরে এখনো শিহরণ জাগায়। তার আম্মু আমাকে আব্বু বলে ডাকতো।সে আমাকে কবিতা লিখতে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল সতত।সাত পেরিয়ে আট বছর হতে চললো তবুও তাকে ভুলতে পারছি না।
দ্বিতীয় বার যার প্রেমে পড়ে ছিলাম তার নাম হাওয়া। তার রূপের প্রেমে পড়ি নাই প্রেমে পড়েছিলাম তার পবিত্র মনের প্রেমে। মনে কোন অহংকার নেই,চরিত্রে কোন দাগ নেই।মনের মতো মেয়ে। যদিও তার পতি হওয়া হলো না,ছন্দপতন এর পর থেকে সে এখনো অনূঢ়া। সে আমাকে এখনো ভালবাসে হয়তো অথবা এখনো মন গাড়ির চাকার মতো করে রেখেছে কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। স্থির মন নয় তার।প্রথম দেখে বলেছিল আপনি খুব সুন্দর কথাটা আজও মনে মৃদঙ্গ বাজায়।
তৃতীয় বার যার প্রেমে পড়েছিলাম সে হলো, কলকাতার রায়দীঘি’র মেয়ে সাখিনা খাতুন।সে একজন নার্স ও একজন কবি।সে আমাকে ভীষণ ভালবাসতো।আমার জন্য অনেক ঝগড়াঝাটি করেছে ফ্যামিলির সঙ্গে। বিবাহের তাগাদা দিতো সতত।ভিসা-পাসপোর্ট সব করেছিল।আমার বাসার ঠিকানা পর্যন্ত যোগাড় করেছিল আসার জন্য একদম প্রস্তুত।একটু সময় চেয়েছিলাম কিন্তু ওর খুব তাড়া,ঝগড়াঝাটি হয় প্রচন্ড।শতবার কল করেছিল রিসিভ করিনি,জানি না সে কেমন আছে! জীবনে হয়তো এটি সবথেকে বড় অন্যায় করেছি।নিজেকে পাপি মনে হয়।
চতুর্থ বার যার প্রেমে পড়েছিলাম সে ছিল ডা.মারিয়া। সে আমায় ভালবাসার লোভ দেখিয়ে সে এখন ভালবাসে না,যদি তারে পেতাম মনের সকল কষ্ট লাঘব হতো।কিন্তু তার সতরঞ্জ খেলা বুঝতে পারিনি ।যদিও তারে ভুলতে কখনোই পারবো না, তার ছবি চোক্ষের তারকায় , তার কন্ঠ মস্তিষ্কে নৃত্য করে,সে এখন মহা প্রেমিক ব্রেন টিউমার কে ভালবাসে😭।আমি জীবনে যত ভালো কাজ করেছি তার বিনিময়ে স্রস্টা যেন তাকে সুস্থ রাখে।আর হয়তো কাউকে কখনো মন থেকে ভালবাসতে পারবো না।কারণ,আমার মন এখন মৃত।
যদিও আমাকে অনেকেই ভালবাসে কিন্তু আমি তাদের কাউকে গ্রহণ করতে পারছি না।
বাসের সহযাত্রী এডভোকেট ম্যাম আমার থেকে নাম্বার নিয়েছিল। বেড শেয়ারের আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিল, কুমারীত্ব হারানোর ভয়ে এড়িয়ে যাই ।ট্রেনে নাম্বার নিয়েছিল ববিতা পাশের সিটের ।পথরোধ করে নাম্বার নিয়েছিল একাদশ শ্রেণির বালিকা।কলেজে পড়তে ডিগ্রি’র আপু প্রেমের অফার করেছিল।এসব স্মৃতি মনে উঠলে আনন্দে ভরে ওঠে মন।
সব ছিল আমার ড্যাশিং লুকের জন্য। নিজের চেহারা নিয়ে স্রস্টার প্রতি কোন আক্ষেপ নেই।
যদিও একজন ভুল মানুষের সঙ্গে জড়িয়ে গেছি।কম্পিউটার বিজনেস করি ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো পড়ছি যাতে করে কবিতার সঙ্গে প্রেম করার সময় পাই ।নিজের স্বাধীনতা বজায় রাখতে গেলে বিজনেস করা উত্তম ছোট্ট হোক বা বড়।
প্রিয় পিতা ছিলো আমার ভালবাসার কেন্দ্রস্থল আমার কোন দাবি অপূর্ণ রাখেনি।যখন ক্লাস সেভেন -এইটে পড়তাম তখন তিনটি বাটন ফোন ব্যবহার করতাম, যখন মানুষের কাছে বাটন ফোন দূষ্কর ছিলো। গ্রীষ্মের রৌদ্রময় দিনে পিতা আমাকে বাইরে বের হতেই দিতো না।কালো হয়ে যাবি বাপ বাইরে প্রচন্ড রোদ যাস না।পিতার এই উক্তি কখনো মন থেকে মুছে যাবে না। পিতার দৈবাৎ মৃত্যু এখনো ভীতরটা আঙ্গার বানিয়ে রেখেছে।
সবাই বলে কবিতা নিয়ে থাক জীবনে ভালোকিছু করতে পারবি।
দিনের অষ্ট প্রহরের চৌপর কবিতা নিয়ে ব্যস্ত থাকি, কবিতা আমার আরাধনা, কবিতা যেন আমার আসল প্রেমিকা।কবিতা লিখি বলে গ্রামের মানুষ পাগল বলে।আমার টার্গেট চল্লিশ হাজার কবিতা লেখা, স্রস্টা বেঁচে রাখবেন কি-না তিনি জানেন ২৭ বছর চলমান, আমি টার্গেট থেকে এখনো অনেক দূরে আর ত্রিশ-চল্লিশ বছর বাঁচাবো! স্রস্টা আমাকে সময় দিতেও পারেন না দিতেও পারেন,তাই কালক্ষেপণ না করে কবিতায় মগ্ন থাকি, প্রতিদিন ৪-৫ টা কবিতা লিখতেই হবে যে কোন বিষয়ের উপর তবে আমি প্রেম ও যৌবন উপর বেশি কবিতা লিখি। অনেকে বলে আমার কবিতায় উষ্ণতা ক্যান আমি ১৮- ৪৬ যুবক যুবতীর কবি হয়ে থাকতে চাই যৌবনের কবি হয়ে বাঁচতে চাই ” বাংলার কবিতা ” ও অন্যান্য ব্লগে আমার প্রায় তিন হাজার কবিতা আছে।কবিতার পাঠক কোটি ছাড়িয়ে গেছে…
ফেসবুকে আমার কবিতা মোটামুটি ভাইরাল।হাজার হাজার মানুষ আমার কবিতা পোস্ট করেছে কেউ নাম দিয়ে কেউ নাম ছাড়া।কেউ প্রবন্ধে, কেউ ক্যাপশনে,কেউ রিলসে,কেউ বিজ্ঞাপনে,কেউ আবৃত্তি করেছে,কেউ গান করেছে,কেউ লাইভ স্ট্রিমে ব্যবহার করেছে।সাধারণ মানুষের প্রতি কোন অভিযোগ নাই তারা ভালবাসা দরুন পোস্ট করতেই পারে।কিন্তু বাণিজ্যিক/ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আমার কবিতা ব্যবহার করা অন্যায় । একজন বিজ্ঞবান ব্যক্তি যখন ভুল করে তখন তার ভুল ধরিয়ে দেওয়া উত্তম…..
প্রিয় অগ্নিমিত্রা পাল আশা করি আমার নোটিশের যথাযথ উত্তর দিবেন……”