সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
কসবায় তৃণমূল কাউন্সিলরকে প্রাণে মারার চেষ্টায় রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। ইতিমধ্যে গুলি কাণ্ডে আফরোজ ওরফে গুলজার খান-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দমন শাখা। তারপরই সামনে এসেছে জমি দখলের অভিযোগ। কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে জমি দখলের অভিযোগ এনেছে ধৃত গুলজার।
যার জবাবে সাংবাদিক বৈঠক থেকে তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ এদিন যা বললেন, তাতে ফের নতুন বিতর্ক মাথা চাড়া দিল বলেই মনে করা হচ্ছে। গত শুক্রবার সন্ধেয় কসবায় অ্যাক্রোপলিস মলের অদূরে নিজের বাড়ির সামনে আততায়ী হামলার মুখে পড়েছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ। বন্দুক থেকে গুলি বের না হওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান সুশান্ত। এদিন তিনি বলেন, “খুনের ঘটনাকে আড়াল করতে জমি দখলের মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে।” তৃণমূল কাউন্সিলর বলেন, “রুবির পাশে যে গুলশন কলনীর কথা বলা হচ্ছে, ওখানে একটা দেড়শ বিঘার ভেরি আছে। ২০২১ সালে প্রচুর মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়েছিল। প্রতিশ্রুতি ছিল, ২২ এর ভোটের পর ভেরিতে কাজ করতে দেওয়া হবে। কিন্তু আমি জিতে যাওয়ায় যারা টাকা তুলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা সমস্যা পড়ে যায়। আমি ওই ভেরি বন্ধ করে দিই। কিছু জমি ভরাট করা হচ্ছিল, সেটাও আটকে দিই। তাই অনেকের স্বার্থে আঘাত লেগেছে বলেই আমাকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল।”
তৃণমূল কাউন্সিলর এও বলেন, “গত ১৫ বছরে ওখানে অনেক সরকারি জমি দখল করে বাড়ি হয়েছে। তার দায়ভার আমি নেব না। আমি আড়াই বছর এসেছি। চেষ্টা করেছি জলাশয় ভরাট যাতে না হয়। তবে একথাও ঠিক, বেআইনি কাজ বন্ধ করার ক্ষমতা পুর প্রতিনিধির হাতে নেই। এটা আটকাতে পারে পুলিশ।”
৫০ লক্ষের সুপারি
১০ লক্ষ টাকা নয়, তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্তকুমার ঘোষকে খুন করতে ৫০ লক্ষ টাকার সুপারি দিয়েছিল কসবা কাণ্ডের মূল চক্রী গুলজার। বিহারের কুখ্যাত দুষ্কৃতী পাপ্পু চৌধুরীর গ্যাংকে সে এই সুপারি দিয়েছিল বলে পুলিশি জেরায় দাবি করেছে গুলজার। তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুন করতে বিহার থেকে মোট চার দুষ্কতী কলকাতায় আসে।
এই চারজনের মধ্যে তিনজনই শার্প শ্যুটার। তাদের মধ্যে একজন এসেছিলেন মাসখানেক আগেই।
তবে প্রথম যে দুষ্কৃতী এই ঘটনাস্থল থেকেই ধরা পড়ে, সে এই দলে নতুন। তবে দলে তিন শার্প শ্যুটার থাকলেও কেন আনকোড়া যুবরাজকে গুলি করতে পাঠানো হয়েছিল, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন তদন্তকারীরা।
যে তিন জন শার্প শ্যুটার কলকাতায় এসেছিল, তাদের বিরুদ্ধে ৩০টির বেশি মামলা আছে বিহার ও ভিন রাজ্যে। যার মধ্যে খুন, ডাকাতি, অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। কবে গুলজার পাপ্পু চৌধুরীর দলবলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে একেবারেই সহযোগিতা করছে না গুলজার। নিজের পরিচয় নিয়েও বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে সে।