সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজের ৪১ জন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করেছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার সেই সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সাসপেন্ড হওয়া ছাত্রদের পক্ষে আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে সওয়াল করলেন আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে মঙ্গলবার কল্যাণীর পড়ুয়াদের মামলার শুনানি ছিল। দিল্লি থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন কল্যাণ। শুনানি শেষে বিচারপতি সাসপেনশনের সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বছরের ৮ জানুয়ারি।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর কল্যাণী মেডিক্যালের ৪১ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে। ১৯ সেপ্টেম্বর তাঁদের সকলকে সাসপেন্ড করেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের ক্লাস করার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। মঙ্গলবারের অন্তর্বর্তী নির্দেশের ফলে আগামী শুনানি পর্যন্ত এই ৪১ জন পড়ুয়ার স্বাভাবিক পঠনপাঠনে আর কোনও বাধা রইল না। কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজের মামলাটি মঙ্গলবার আদালতে উঠবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। কল্যাণ যে হেতু সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের জন্য দিল্লিতে রয়েছেন, তাই তিনি সওয়াল করতে পারবেন কি না, তা নিয়েও জল্পনা ছিল। কিন্তু সংসদের কাজ মিটিয়ে বিকালে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সওয়াল করেন কল্যাণ। উল্লেখ্য, বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়াদের হয়ে তিনিই পর পর মামলাগুলি লড়ছেন। তাঁর কথায়, ”যে ভাবে কোনও কিছু না দেখে গণহারে বেছে বেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্তদের সাসপেন্ড করা হয়েছে, এটাই সবচেয়ে বড় থ্রেট কালচার।”
মোট ৪১ জন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। ছয় মাসের জন্য তাদের সাসপেন্ড করা হয়। তারা ক্লাস করতে পারবে না। স্টাইপেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। তাদের সাসপেনশন তুলে নিতে মামলা করা হয়। সেই মামলার শুনানিতেই এই বড় নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পড়ুয়াদের সাসপেন্ড করার আগে কি তদন্ত করেছিলেন? কলেজ কাউন্সিলকে প্রশ্ন আদালতের। ইউজিসি রেগুলেশন ২০০৯ সালের আইনের সূত্রে সব পক্ষকে শুনানির সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এদিন শর্তসাপেক্ষে পড়ুয়াদের ক্লাস করার অনুমতি দেওয়া হল। সাসপেন্ড হওয়া ২০ জন ছাত্রকে কলেজে প্রবেশের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ক্লাসে ঢোকার অনুমতি দিল কলেজ। একাডেমিক কার্যকলাপে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকবে না। হাউজ স্টাফ হিসেবে ডিউটিও করতে পারবে তারা। তবে তাদের হস্টেলে থাকার অনুমতি নেই।