সুষমা পাল মন্ডল। কলকাতা সারাদিন।
শুধুমাত্র 'নো ডিউজ' সার্টিফিকেট দেখাতে পারেননি বলে প্রার্থিপদ বাতিল হয়েছে প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরের। এবার দু'দফা ভোট পার করে এই 'নো ডিউজ' সার্টিফিকেট নিয়ে নতুন নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের। পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে কড়া চিঠি দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। জানিয়ে দিল, 'নো ডিউজ' সার্টিফিকেট ইস্যু করার ক্ষেত্রে নিয়মে গুরুত্বপূর্ণ বদল আনা হল।
অর্থাৎ এরপর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন নিয়মই কার্যকর হবে।
কী কী নিয়ম আনা হয়েছে ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রে। কমিশন জানিয়েছে, প্রার্থীর আবেদনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনও বকেয়া না থাকলে ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট ইস্যু করতে বাধ্য থাকবে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর। দ্বিতীয়ত, যদি বকেয়া থাকে, প্রার্থীর আবেদনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে তা প্রার্থীকে জানাতে হবে।
শুধু তাই নয়, বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট ইস্যু করতে হবে। এবার থেকে নির্বাচন বিধি বলবত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুধুমাত্র ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট ইস্যু করার জন্য একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হবে। ‘সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম’-এর মাধ্যমে ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরকে বীরভূমে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। তবে প্রার্থিপদ খারিজ হয়ে যায়। কমিশন জানায়, ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট না থাকার জন্য তা বাতিল করা হল। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও যান দেবাশিস। যদিও এ নিয়ে আদালত কোনও নির্দেশ দেয়নি। তবে কমিশন এবার এই ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানাল।
কোচবিহারের পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন আইপিএস দেবাশিস ধর। একুশের বিধানসভা ভোটে কোচবিহারের শীতলখুচি কাণ্ডের পর তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। পরে সাসপেনশন প্রত্যাহার হলেও কম্পালসরি ওয়েটিংয়ে রাখা হয় তাঁকে। দেবাশিস ধরের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের বিভাগীয় তদন্ত চলছে। ইস্তফা দিলেও নবান্ন থেকে এখনও তাঁকে রিলিজ দেয়নি।
কমিশন সূত্রের খবর, সেকশন ৩৬ অফ রিপ্রেসেন্টেশন অফ পিপলস অ্যাক্ট অনুযায়ী, যদি কোনও প্রার্থী সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হন, তাঁকে 'নো ডিউজ' সার্টিফিকেট জমা করতে হয়। বীরভূমের বিজেপি প্রার্থী সেই সার্টিফিকেট জমা দিতে পারেননি। তাই তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ফর্ম ২৬ পূরণ করে হলফনামা জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু দেবাশিস ধর তা করেননি।
কমিশনের মনোনয়ন বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে গত ২৬ এপ্রিল হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা। তাঁর বক্তব্য ছিল, সুপ্রিম কোর্টের ছাড়পত্র থাকার পরও তাঁর প্রার্থীপদ বাতিল হয়েছে। কিন্তু হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ এই মামলাটি গ্রহণ করেনি। এরপরই গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দেবাশিস। যদিও শীর্ষ আদালত এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করে দেবাশিসবাবুকে কমিশনের কাছে যেতে বলেন।