শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“একটু অপেক্ষা করুন, বলে দেব কী করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে চলছে পুলিশ। যত অসভ্যতা করা যায় করবে। একটু পর হইতো পুলিশ এখানেই ঝাঁপিয়ে পড়বে। আমরা এসেছি সহমর্মিতা জানাতে। ভেঙে পড়বেন না। আমাদের নেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রথম দিনই বলে দিয়েছেন। চিন্তা করবেন না, আমরা আপনাদের পাশে রয়েছি”। এভাবেই চাকরিহারা শিক্ষকদের অনশন মঞ্চে গিয়ে আশ্বাস দিলেন বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গাঙ্গুলী।
সল্টলেকের এসএসসি ভবনে এদিন সকালে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ। ছিলেন এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডলও। এদিকে দিলীপ ঘোষ বীরভূম থেকে গোটা ঘটনায় একহাত নিলেন সরকারকে। বললেন, “এদের সমস্যা সমাধানেই ইচ্ছেই নেই।” বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টা নাগাদ এসএসসি দপ্তরের কাছে চাকরিহারাদের অনশনমঞ্চে যান অনশনকারীদের মঞ্চে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ-সহ বিজেপির একাধিক নেতা-নেত্রীকে। ছিলেন এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডলও। সেখানেই ফের যোগ্য-অযোগ্যদের আলাদা করার দাবি তোলেন অভিজিৎ।
এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল জানালেন, একটা সময়ে তিনি এই দপ্তরের দায়িত্ব ছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ানো তাঁর কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। পাশাপাশি বর্তমান এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ভূমিকা নিয়েও। এদিকে দিলীপ ঘোষ বললেন, “অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিজের মতো করে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এই সরকারের সমস্যা সমাধানের ইচ্ছেই নেই।”
একই সাথে অভিজিৎ গাঙ্গুলী বলেন, “একটু অপেক্ষা করুন, বলে দেব কী করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে চলছে পুলিশ। যত অসভ্যতা করা যায় করবে। একটু পর হইতো পুলিশ এখানেই ঝাঁপিয়ে পড়বে। আমরা এসেছি সহমর্মিতা জানাতে। ভেঙে পড়বেন না। আমাদের নেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রথম দিনই বলে দিয়েছেন। চিন্তা করবেন না, আমরা আপনাদের পাশে রয়েছি”।
তাঁদের সাথে কথা বলে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “অনশন করার কী দরকার? না করলেই পারতেন। শরীর খারাপ হয়ে যাবে”। এরপরই সরকারকে নিশানা করে বলেন, “আপনাদের দুর্নীতির কারণে চাকরি হারিয়েছেন এঁরা। বিষয়টি সুষ্ঠ ভাবে মেটানোর ইচ্ছেই নেই সরকারের। বিষয়টিকে নিয়ে রাজনীতি করছেন তারা”।

প্রসঙ্গত, দু’দিন আগেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতির সমাধানে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কথা ছিল, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আলোচনায় বসবেন তিনি। কিন্তু চাকরিহারাদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ দেখেই তাঁর মনোভাব বদলে যায়। পরিষ্কার ভাষায় তিনি বলে দেন, “যে সরকার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর লাঠি চালায়, তাদের সঙ্গে আলোচনার কোনও মানেই হয় না। আর কোনও সদিচ্ছা দেখানোর প্রশ্নই নেই”।