সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
ভারতের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ শহরের শিরোপা আবারও ছিনিয়ে নিল কলকাতা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরো বা এনসিআরবি–র সর্বশেষ রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০২৩ সালে কলকাতায় ধর্তব্যযোগ্য অপরাধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর ফলে টানা চতুর্থবার দেশের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ শহরের স্বীকৃতি পেল কলকাতা।
২০২৩ সালে প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায় কলকাতায় অপরাধের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮৩.৯। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৮৬.৫ এবং তার আগের বছর ১০৩.৫। অর্থাৎ প্রতিবছরই অপরাধ কমছে এবং নিরাপত্তার মান ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। এই সাফল্য প্রমাণ করে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে কলকাতা পুলিশ ও প্রশাসন কতটা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে।
নারীদের ওপর অপরাধের ক্ষেত্রেও কলকাতা অনেকটাই এগিয়েছে। রিপোর্ট বলছে, ২০২৩ সালে শহরে নারী নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে ১,৭৪৬টি, যা ২০২২ সালের তুলনায় কম। ধর্ষণ এবং শিশু নির্যাতনের ঘটনাও হ্রাস পেয়েছে। নারীদের জন্য দেশের সবচেয়ে নিরাপদ শহরের তালিকায় কলকাতা রয়েছে তৃতীয় স্থানে। প্রথম স্থানে রয়েছে চেন্নাই এবং দ্বিতীয় স্থানে কোয়েম্বাতুর।

এনসিআরবি রিপোর্ট অনুযায়ী, যেখানে কলকাতায় অপরাধের হার সর্বনিম্ন, সেখানে অপরাধের দিক থেকে সবচেয়ে উপরে রয়েছে কেরলের কোচি। সেখানে প্রতি এক লক্ষ জনে অপরাধের সংখ্যা ৩১৯২.৪। দ্বিতীয় স্থানে দিল্লি (২১০৫.৩) এবং তৃতীয় স্থানে গুজরাটের সুরাট (১৩৭৭)। অর্থাৎ নিরাপত্তার দিক থেকে কলকাতা দেশের অন্যান্য বড় শহরগুলির তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে।
প্রসঙ্গত, বাংলায় বিরোধী দল অর্থাৎ সিপিএম এবং বিজেপির পক্ষ থেকে প্রায়শই কলকাতার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং অপরাধের পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। কিন্তু এনসিআরবি–র তথ্য প্রমাণ করছে ঠিক উল্টো ছবি। কলকাতা দেশের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ শহর, এই সত্যিটিই বিরোধীদের সমস্ত কুৎসা এবং সমালোচনার জবাব।

পুলিশের ভূমিকা ও প্রশাসনের সাফল্য
অপরাধ দমনে কলকাতা পুলিশের কড়া নজরদারি, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং দ্রুত তদন্ত প্রক্রিয়া বড় ভূমিকা নিয়েছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের নিরলস প্রচেষ্টা শহরকে আজ দেশের সবচেয়ে সুরক্ষিত নগরীতে পরিণত করেছে।

একটি ইংরেজি দৈনিকের রিপোর্ট তুলে ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন। সেখানেই তিনি বলেছেন, তৈরি করা মিথ্য, ভুয়ো খবর, ঘৃণামূলক প্রচার সত্ত্বেও কলকাতা চতুর্থবারের জন্য দেশের নিরাপদতম শহর বলে চিহ্নিত হয়েছে।
যদিও বাংলার প্রধান বিরোধী দল বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ায় পেজে তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষকে তীব্র আক্রমণ করে বলা হয়েছে, ‘কীভাবে হেডলাইন বিক্রি করে আপনি সাংসদ হয়েছেন, তা আমরা জানি। আপনার রাজ্য সরকার কীভাবে তথ্য বিকৃত করে, তাও আমাদের জানা। অর্ধেক সত্য রিপোর্ট হওয়া সত্ত্বেও আমাদের বাংলার কী অবস্থা দেখুন। বাংলার বাইরে বসে বাংলার সম্পর্কে কোনও ভাষণ দিতে আসবেন না।’