সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
আরজি কর মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ফের বড় ধাক্কা খেল নির্যাতিতার পরিবার। আরজি কর কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের ফাঁক নিয়ে করা আবেদন শোনার জন্য কোনও তাড়াহুড়ো নেই। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। পরিবারের তরফে শুক্রবার শীর্ষ আদালতে মামলার জরুরি শুনানির জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সিনিয়র আইনজীবী করুণা নন্দী। পরিবারের আইনজীবী করুণা নন্দী প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, তিন বার লিখিতভাবে আবেদন করা হয়েছে মামলা বিচার্য তালিকায় ওঠার জন্য। এখনও মামলা বিচার্য তালিকায় ওঠেনি। হাইকোর্ট মামলা শুনতে পারবে কিনা সেই মর্মে শুধু ব্যাখ্যা চায় পরিবার।
এর আগেই সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তিলোত্তমার মা-বাবা। তদন্তের ধরন ও গতি প্রকৃতি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি, একা সঞ্জয় রায় নয়, তিলোত্তমাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় জড়িত একাধিক ব্যক্তি। পুনরায় তদন্তের জন্য দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁরা। তিলোত্তমার পরিবারের হয়ে আইনজীবী করুণা নন্দী শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে আর্জি দাখিল করেছিলেন।
পরিবারের আইনজীবীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না জানান, এই আবেদন শোনার মতো কোনও তাড়াহুড়ো নেই। এরপরই আদালত জানিয়ে দেয়, আগামী ১৭ মার্চ আরজি কর ধর্ষণ-খুনের মামলার পরবর্তী শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। অর্থাৎ, সেই দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া এখন আর কোনও উপায় নেই পরিবারের। যদি না মামলা নতুন করে কোনও একদিন দিয়ে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টে আরজি কর নির্যাতিতার পরিবারের মামলায় হাইকোর্টে শুনানি মুলতুবি রাখার আবেদন করেছিলেন পরিবারের আইনজীবী। নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী বলেছিলেন, “সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে আবেদন জানানো হয়েছে। শীর্ষ আদালতে শুক্রবার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। আপাতত দু’সপ্তাহের জন্য মামলাটি হাইকোর্টে মুলতুবি রাখা হোক।’ সেই আবেদনের শুনানিই এবার পিছিয়ে গেল অনেকটা।
প্রসঙ্গত, আরজি করের ঘটনায় নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে জানানো হয়, মামলা ফেরানো হোক কলকাতা হাইকোর্টে। আরও দাবি, পুনরায় সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিক আদালত। দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীরা। উল্লেখ্য নির্যাতিতার পরিবারের পূর্বের দায়ের করা আবেদন প্রত্যাহার করা হয়েছিল। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, নতুন করে আবেদন জানাতে পারবে নির্যাতিতার পরিবার।
গত বুধবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ আরজি কর ইস্যুতে নির্যাতিতার পরিবারের আবেদন শুনেছিলেন। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, যেহেতু ইতিমধ্যেই এই মামলায় একটি রায় হয়েছে, তাই নির্যাতিতার পরিবারকে নতুন করে আবেদন করতে হবে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, “আপনাদের আবেদনে এমন কিছু বিষয় রয়েছে যা বিতর্কিত। আদালতে আজ যা-ই বলা হোক, সেটার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে।”

নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী করুণা নন্দী জানিয়েছিলেন, “সেটা আমরা জানি। কিন্তু সময়ের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। রায় ঘোষণার আগেই এই আবেদন করা হয়েছিল।” আদালত জানিয়ে দেয়, সেটা জানিয়েই নতুন করে মামলা করতে হবে নির্যাতিতার পরিবারকে। সেই আবেদনই করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে।