সুষমা পাল মন্ডল। কলকাতা সারাদিন।
ম্যানুফ্যাকচারিং বা নির্মাণ শিল্পে দেশের সেরা বাংলা। নির্মাণ শিল্পে দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থান দেয় বাংলা। ম্যানুফ্যাকচারিং বা নির্মাণ শিল্পে সবথেকে বেশি সংস্থা রয়েছে বাংলায়। মহিলা মালিকানাধীন সবথেকে বেশি সংস্থা রয়েছে বাংলায়। অন্যান্য ক্ষেত্রে কর্মরত মহিলার সংখ্যার নিরিখে দেশের সেরা বাংলা। বাংলার শাসক দল তৃণমূল নয়, এমনটাই জানাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি শাসিত কেন্দ্রের মোদি সরকারের সাম্প্রতিকতম রিপোর্ট। স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই সাম্প্রতিকতম রিপোর্টে বাংলার মুকুটে শিল্পায়নের নয়া শিরোপা যুক্ত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে যেখানে অ্যানুয়াল সার্ভে অফ আন ইন কর্পোরেটেড সেক্টর এন্টারপ্রাইজেস শীর্ষক এই রিপোর্ট প্রকাশে এনে বাংলাকে সেরার শিরোপা দেওয়া হয়েছে, সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই আরো একবার প্রমাণিত হয়ে গেল বাংলায় ম্যানুফ্যাকচারিং বা নির্মাণ শিল্প নেই বলে কয়েকদিন আগে সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যে দাবি করেছিলেন তার সম্পূর্ণ মিথ্যে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বাংলার বিরুদ্ধে কুৎসা মাত্র।
উচ্ছ্বসিত মমতা
কেন্দ্রীয় শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে অ্যানুয়াল সার্ভে অফ আনইন কর্পোরেটেড সেক্টর এন্টারপ্রাইজেস শীর্ষক রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন মমতা। যেখানে তিনি তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স অফিসের তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত রিপোর্টে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বা এমএসএমই ক্ষেত্রে ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি এবং মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থানে দেশের সেরার শিরোপা জিতে নিয়েছে বাংলা।
আর কেন্দ্রীয় রিপোর্ট উল্লেখ করে এসবই খুঁটিনাটি সাফল্যের কথা সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “আরও একবার এমএসএমই ক্ষেত্রে বাংলার অবস্থান দেশের মধ্যে শীর্ষে।” এই সাফল্যের পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেছেন যে, এই শিল্পক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতীতে একাধিকবার এমএসএমই-এর বিকাশের জন্য বিশেষ উদ্যোগের কথা বলেছেন এবং প্রশাসনিক নির্দেশও দিয়েছেন। তাঁর সেই প্রচেষ্টার ফলই এখন দৃশ্যমান হচ্ছে বলে পোস্টে জানিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের “অ্যানুয়াল সার্ভে অফ আন-ইনকর্পোরেটেড সেক্টর এন্টারপ্রাইজেস” রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ এমএসএমই ক্ষেত্রে দেশের শীর্ষস্থান দখল করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর পোস্টে উল্লেখিত তথ্যগুলো হল:
প্রথমত, ম্যানুফ্যাকচারিং এন্টারপ্রাইজে কর্মীদের জড়িত থাকার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ দেশের মধ্যে প্রথম, যা ১৩.৮১%।
দ্বিতীয়ত, ম্যানুফ্যাকচারিং এন্টারপ্রাইজের সংখ্যার হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ এগিয়ে, যা ১৬.০২%।
তৃতীয়ত, মহিলা নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যার নিরিখে শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ, যা ৩৬.৪%।
চতুর্থত, আন-ইনকর্পোরেটেড সেক্টরে মহিলা কর্মীর হারেও শীর্ষে রাজ্য, যা ১২.৭৩%।
এর আগে গত বছর পুজোর প্রাক্কালে, ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে মহিলা পরিচালিত ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পের সংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ দেশে প্রথম স্থানে রয়েছে। তিনি তখন বলেছিলেন, রাজ্যের মহিলারা দেশের ২৩.৪২% ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মালিক। মহিলাদের স্বনির্ভর করতে তাঁর সরকার একাধিক প্রকল্প চালু করেছে, যার মধ্যে শহর ও গ্রামের মহিলারা এমএসএমই-এর আওতায় বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এই সাফল্যই ধরা পড়েছে কেন্দ্রের সাম্প্রতিক রিপোর্টে।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পোস্টে আরও লিখেছেন, “এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে নারীদের স্বনির্ভর করার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি অতুলনীয়। রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।” এমএসএমই ক্ষেত্রে রাজ্যের এই অগ্রগতি শুধু অর্থনৈতিক উন্নতিই নয়, সামাজিক ক্ষমতায়নেরও একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

1. West Bengal tops in the country in terms of workers engaged in “Manufacturing Enterprises” (13.81%).
2. At all-India level, West Bengal shares the maximum percentage of “Manufacturing” enterprises (16.02%) and “Other Service” enterprises (13.09%).
3. West Bengal boasts the highest percentage (36.4%) of female headed establishments in India.
4. West Bengal shares the highest percentage (12.73%) in female workers in ‘Unincorporated Sector Enterprises’.