সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
বাংলার সাফল্যের স্বীকৃতি কেন্দ্রের মোদি সরকারের রিপোর্টে ৷ গত শনিবার নীতি আয়োগের রিপোর্ট কার্ডে ভাল রেজাল্ট করেছে বাংলা৷ সবচেয়ে ভাল ফলাফল দেখা গিয়েছে কর্মসংস্থানের নিরিখে৷ সদ্য প্রকাশিত নীতি আয়োগের ‘স্টেট সামারি রিপোর্ট ফর ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এ মেনে নেওয়া হয়েছে যে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বাংলার বার্ষিক বেকারত্বের হার ছিল মাত্র ২.২ শতাংশ, যেখানে দেশের গড় ৩.২ শতাংশ। এবার সেই রিপোর্ট কার্ডই সগর্বে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন এক্স হ্যান্ডেলে মমতা লেখেন, ‘আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, নীতি আয়োগ আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ আর্থ-সামাজিক সূচকগুলিতে, বিশেষ করে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে, শক্তিশালী পারফরম্যান্সকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২২-২৩ সালে রাজ্যের বার্ষিক বেকারত্বের হার ছিল মাত্র ২.২%, যা জাতীয় গড় ৩.২% এর চেয়ে ৩০% কম। নীতি আয়োগের সদ্য প্রকাশিত সারসংক্ষেপ প্রতিবেদনে আরও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের ইতিবাচক অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে:
সাক্ষরতার হার: ৭৬.৩%, জাতীয় গড়ের ৭৩% (২০১১ সালের হিসাবে) থেকে বেশি।
শিক্ষার ফলাফল: জাতীয় গড়ের তুলনায় দশম ও দ্বাদশ শ্রেণিতে স্কুল ছাড়ার হার কম এবং পাসের হার বেশি।
আয়ুষ্কাল: ৭২.৩ বছর (২০২০), জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি।
লিঙ্গ অনুপাত: প্রতি ১,০০০ পুরুষের মধ্যে ৯৭৩ জন কন্যার জন্ম – জাতীয় গড়ের ৮৮৯-এর চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে ভাল।
শিশুমৃত্যুর হার: প্রতি ১,০০০ জীবিত জন্মে ১৯ জন (২০২০), এবং
মোট উর্বরতা হার: প্রতি মহিলার মধ্যে ১.৬ শিশু (২০১৯-২১), উভয়ই জাতীয় গড়ের চেয়ে ভাল।
জীবনযাত্রার মান: রিপোর্টে নিয়মিত উন্নতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে গড়ের চেয়ে বেশি পারিবারিক পানীয় জলের অ্যাক্সেস। এগুলি উন্নয়নের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের অব্যাহত প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে। এর বাস্তবায়নে যাঁরা অবদান রেখেছেন তাঁদের সকলকে অভিনন্দন। জয় বাংলা!’
গত ২৪ মে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে নীতি আয়োগের দশম বৈঠক। বৈঠকে যখন যোগ দিয়েছিলেন দেশের প্রায় সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও প্রশাসকরা, তখন ব্যতিক্রম ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। নীতি আয়োগের রিপোর্টে উল্লেখ, ২০২২–২৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের বার্ষিক বেকারত্বের হার ছিল মাত্র ২.২%, যা ভারতের জাতীয় গড় ৩.২%-এর তুলনায় প্রায় ৩০% কম। মুখ্যমন্ত্রী কথায়, ‘এই সাফল্য সবাইকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদির উন্নয়নের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের দায়বদ্ধতারই প্রমাণ’।
এর আগে, গত বছরের জুলাইয়ে নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু শেষপর্যন্ত ‘বলতে দেওয়া হয়নি’ বলে বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ করেছিলেন, ‘আমাকে বলতে দেওয়া হয়নি। আমার বলার সময় থামিয়ে দেওয়া হয়। আমি বলতে শুরু করার ৫ মিনিটের মধ্যে আমার মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটা অপমানজনক’।
মমতা বলেছিলেন, ‘এনডিএ শরিকদের বলতে বেশি সময় দেওয়া হয়। চন্দ্রবাবু নাইডুকে ২০ মিনিট বলতে দেওয়া হয়। অথচ আমি বঞ্চনার কথা বলতেই থামিয়ে দেওয়া হয়। বলতে শুরু করার ৫ মিনিট পরই মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটা অপমানজনক। আমি চললাম। প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি বৈষম্য করা উচিত নয়।” মমতা আরও জানান, “রাজ্যগুলির স্বার্থে আমি এসেছিলাম। একা। বিরোধীদের কেউ আসেনি। সব বিরোধীদলের হয়ে কথা বলেছি।”