সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
কসবা সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের পর দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর কলেজ ফের উঠে এল বিতর্কের কেন্দ্রে। সোনারপুর কলেজ বিতর্ক ঘিরে ছাত্রমহল থেকে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
ভাইরাল হয়েছে এমন একটি ভিডিও যেখানে দেখা যাচ্ছে, ৪৪ বছর বয়সি ছাত্রনেতা প্রতীক কুমার দে কলেজ চত্বরে এক ছাত্রীকে দিয়ে নিজের মাথা টিপাচ্ছেন।
ভিডিওটি সামনে আসতেই সোনারপুর মহাবিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে, কলেজের পঠনপাঠনের পরিবেশের বদলে এমন কর্মকাণ্ডে ভবিষ্যতের ক্ষতি হচ্ছে বলে মত পড়ুয়াদের একাংশের। (TMC student wing controversy)
কে এই প্রতীক কুমার দে?
প্রতীকের পরিচয় যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি সোনারপুর কলেজের ছাত্র-পরিষদের কো-অর্ডিনেটর। তাঁকে এই পদে বসিয়েছেন সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলি মৈত্র। (Sonarpur TMC leader news) এছাড়াও তিনি রাজপুর টাউন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি এবং সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতিও। Sonarpur College scandal
যদিও বিরোধীদের দাবি, প্রতীক আদপে বারুইপুর কলেজের প্রাক্তন ছাত্র, তাহলে কীভাবে তিনি সোনারপুর কলেজে এত প্রভাব খাটান? এই প্রশ্ন ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
পুরনো অভিযোগও সামনে এল
রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পাপিয়া হালদার জানিয়েছেন, “আমি আগেই প্রতীকের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক হেনস্থার অভিযোগ জানিয়েছিলাম সোনারপুর থানায়। আজকের ঘটনা ফের প্রমাণ করল আমি ঠিক বলেছিলাম। দলীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।”
এই মন্তব্যে তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-ও সামনে উঠে আসছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
ছাত্ররাজনীতি না ব্যক্তিগত ক্ষমতার প্রদর্শন?
এই ঘটনার পর বহু পড়ুয়ার দাবি, কলেজ এখন আর শিক্ষার জায়গা নেই—বরং কিছু ছাত্রনেতার ক্ষমতা প্রদর্শনের অঙ্গন হয়ে উঠেছে। একজন পড়ুয়া বলেন, “একজন মাঝবয়সি ব্যক্তি নবীন ছাত্রীর উপর এইরকম ক্ষমতাচর্চা করতেই পারেন না। এটা লজ্জার।”
যদিও এখনও পর্যন্ত তৃণমূল নেতৃত্ব বা বিধায়ক লাভলি মৈত্র এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। ছাত্রমহল এবং রাজনৈতিক মহল তাকিয়ে আছে কবে দল মুখ খুলবে বা প্রতীক দে’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

এই সোনারপুর কলেজ বিতর্ক আরও একবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতির প্রভাব এবং ছাত্রনেতাদের ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রশ্ন তুলল। পড়ুয়ারা চাইছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক শিক্ষার স্থান, না যে কোনো ব্যক্তি বিশেষের প্রভাব বিস্তার ও ব্যক্তিগত আখ্যানের মঞ্চ।