বিতস্তা সেন। কলকাতা সারাদিন।
Founder of Manzuri: যৌনতা বিক্রি করে শুরু করেছিলেন জীবিকা নির্বাহ, আজ তিনি ১২ কোটি টাকার মালিক।
যৌনতা, যে কথাটিকে এখনও ভারতবর্ষে সর্বসমক্ষে বলতে লজ্জা পান অনেকে। এখনও যেখানে যৌনতা বিষয়ক আলোচনা করা হয় আড়ালে, সেই ভারতবর্ষের বুকেই যৌনতা বিষয়ক পণ্য, বিশেষ করে মহিলাদের যৌনতার সংক্রান্ত পণ্য বিক্রি করে আজ ১২ কোটি টাকার কোম্পানির মালিক। মঞ্জুরির প্রতিষ্ঠাতা রিতেশ ডি রিটেলিন।
রিতেশ হলেন ‘মঞ্জুরি’ নামক একটি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। এই কোম্পানি এক কথায় মহিলাদের যৌন আনন্দ প্রদানকারী পণ্য বিক্রি করে। এই কোম্পানির মাধ্যমে রিতেশ দেশের সবথেকে বড় নিষেধাজ্ঞাগুলিকে ভাঙার চেষ্টা করছেন। এই কোম্পানির পণ্য ব্যবহার করে মহিলারা যাতে তাঁদের যৌন জীবন উপভোগ করতে পারেন, সেই চেষ্টাই করছেন রিতেশ।
সম্প্রতি ১ শতাংশ ক্লাব নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে রিতেশ বলেন, ‘আমার কোম্পানির পণ্যগুলিকে সেক্স টয় বলা যায় না। ভারত সরকার এখনও সেক্স টয়-এর অস্তিত্ব স্বীকার করে না, তাই এটিকে সেক্স টয় বলা চলে না। কলেজে পড়াকালীন এই কোম্পানি খোলার চিন্তা ভাবনা করেছিলাম আমি, তখন আমার বয়স মাত্র ১৯ বছর।’
কোম্পানিটি যখন শুরু হয় তখন রিতেশের সঙ্গী হয়েছিলেন আস্থা ভোগরা। প্রথমদিকে রাজি না থাকলেও পরে রিতেশের সঙ্গে তিনি এই কোম্পানিতে যোগদান করেন। আস্থার মনে হয়, এখনও কোথাও এমন কোনও প্ল্যাটফর্ম নেই, যা মহিলাদের শারীরিক চাহিদা এবং সেটা নিয়ন্ত্রণ করার গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষিত করে। তাই তিনি রাজি হয়ে যান। তবে কোম্পানিটি যখন শুরু হয়, তখন শুধুমাত্রই অর্থ উপার্জনের লক্ষ্য নিয়েই এই কোম্পানিটি শুরু করেছিলেন রিতেশ।
রিতেশ বলেন, ‘আমার মূল লক্ষ্য ছিল টাকা উপার্জন। আমার বাবা আমাকে যে পকেট মানি দিতেন, সেটা কীভাবে বাড়ানো যায় সেই চিন্তা ভাবনাই করতাম সব সময়। তবে আমি যখন কোম্পানি শুরু করি, তখন কোনও প্রতিযোগিতা করতে হয়নি আমাকে, কারণ মার্কেটে এই ব্যাপারটি নিয়ে কেউ চিন্তাই করত না। বর্তমানে এই কোম্পানির মোট মূল্য ১.৫ কোটি। এই কোম্পানির ৭০% শেয়ারের মালিক তিনি নিজে। রিতেশের নিজস্ব সম্পত্তির মূল্য ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা।’
সারা বছরে মাত্র ৪০ লাখ টাকা তিনি ব্যয় করেন এই কোম্পানির পেছনে। এছাড়াও বিভিন্ন এডুকেশনাল কোর্স করান তিনি। তাঁর মূল লক্ষ্য হল, যৌনতাকে একটি শিক্ষার জায়গায় নিয়ে যাওয়া। কোনও লজ্জা নয়, বরং সগর্বে যাতে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যায়, তার জন্যই তিনি এই কোর্সগুলো করান।
প্রসঙ্গত, শুধু যৌনতা বিষয়ক পণ্য ব্যবহার করা নয়, অর্গাজম ব্যবধান কী? কেন সমাজে মেয়েরা ছেলেদের থেকে কম বেতন পান? পিতৃতন্ত্রের মতো বিষয় কথাটা সম্পর্কিত আমাদের সমাজে? এই ধরনের সমস্যা নিয়েও আগামী দিনে কাজ করবে মঞ্জুরি। তাই মঞ্জুরি শুধুমাত্র একটি কোম্পানি নয়, যৌন বিষয়ক ক্ষেত্রে একটি বৃহৎ বড় পদক্ষেপ।