সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
মালদহের তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকার ওরফে বাবলা সরকারের খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দুজনকে ধরার জন্য আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করল মালদহ জেলা পুলিশ। তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকার ওরফে বাবলাকে খুনের ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই খুনের ঘটনায় জড়িত আরও দু’জনকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ।
এবার তাদের জন্য দু’লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করল পুলিশ। মালদহ জেলা পুলিশ জানিয়েছে, কৃষ্ণ রজক ওরফে রোহন এবং বাবলু যাদব তৃণমূল নেতার খুনের সঙ্গে যুক্ত। তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে বা কোনও খোঁজ পুলিশকে দিতে পারলে দু’লক্ষ টাকা পুরস্কার মিলবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, পলাতক দুই অভিযুক্তের নাম বাবলু যাদব। বয়স ৩১ বছর। তিনি মালদহের মহানন্দা কলোনির বাসিন্দা। অপরজন কৃষ্ণ রজক ওরফে রোহন। বয়স ৩০ বছর। তিনি মালদহ রেলওয়ে বারাক কলোনির বাসিন্দা। তাদের ছবি-সহ পরিচয়পত্র প্রকাশ করে পুলিশকে এই দুই ব্যক্তির খোঁজ দিতে পারলে ২ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে তথ্য প্রদানকারীর নামও গোপন রাখা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইউড কারখানার সামনে খুন হন দুলাল। বাইকে চেপে এসে তিন জন দুষ্কৃতী দুলালকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে ফ্ল্যাট থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বের প্লাইউড কারখানায় দাঁড়িয়েছিলেন দুলাল। তখনই মোটরবাইকে চেপে তাঁকে তাড়া করে কয়েক জন দুষ্কৃতী। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, প্রাণ বাঁচাতে প্লাইউড কারখানায় পড়িমরি করে ঢুকে পড়ছেন দুলাল। আর তাঁর দিকে বন্দুক তাক করে গুলি ছুড়ছে দুষ্কৃতীরা। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, একটি গুলি দুলালের মাথার কাছে লাগে। ঘটনার দিনই বিহারের কাটিহার জেলার বাসিন্দা সামি আকতার ও আবদুল গনি এবং ইংলিশবাজার থানার গাবগাছির যদুপুরের বাসিন্দা টিঙ্কু ঘোষকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বিহারের দুই দুষ্কৃতী সুপারি কিলার হিসেবে কাজ করেছে বলে দাবি পুলিশের। এই মামলায় শুক্রবার ইংলিশবাজার শহরের দুই বাসিন্দা অভিজিৎ ঘোষ ও অমিত রজককে গ্রেফতার করা হয়। বাবলার বাড়ি থেকে মাত্র আড়াইশো মিটার দূরেই রেলের বারাক কলোনিতে ধৃত অমিতের বাড়ি। পুলিশের সন্দেহ, এই খুনে বিহারের দুই দুষ্কৃতীকে সুপারি কিলার হিসেবে ব্যবহার করা হলেও অমিতের বাড়ি থেকেই বাবলার গতিবিধি জেনেছে আততায়ীরা।
অন্যদিকে মালদহের ইংরেজবাজারের তৃণমূল কাউন্সিলর খুনে অভিযুক্ত বাবলু যাদবের স্ত্রীর দাবি, ওর সঙ্গে এখন আর কোনও সম্পর্ক নেই। আগে টের পেলে ধরিয়ে দিতাম। বাবলু আসলে ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জের বাসিন্দা। কোনও কাজ করত না। অথচ গভীর রাতে বাড়ি ফিরত। এখন আর আমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই ওর। পাশাপাশি আরেক পলাতক অভিযুক্ত কৃষ্ণ প্রসঙ্গে বাবলুর স্ত্রী সুচরিতার বক্তব্য, কৃষ্ণ মাঝে মাঝেই আমাদের বাড়ি আসত। তবে ১ জানুয়ারির পর থেকে ওকে আর দেখতে পাইনি। ২ জানুয়ারি পুলিশ আমার বাড়িতে এসেছিল। পুলিশকেও তাই জানিয়েছি।