সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
ফের রিওপেন হতে চলেছে ধনঞ্জয়ের কেস! ‘ধর্ষকের গ্রাম’ এই অপবাদ আর কিছুতেই মাথাতে নিতে চান না বাঁকুড়ার ছাতনাক কুলুডিহির বাসিন্দারা। ‘কোনও ভাবেই দোষী নয় ধনঞ্জয়’ এমনই দাবি তাঁদের। তাই এবার আরজিকর-কাণ্ডের আবহে নিজেদের গ্রামের তথা মৃত ধনঞ্জয়ের সম্মান ফেরাতেই ফের নতুন করে কেস রিওপেন করতে চান তাঁরা।
বাঁকুড়া জেলার ছাতনার কুলুডিহির বাসিন্দা ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। পেশায় নিরাপত্তা রক্ষী। কাজের কারণে কলকাতাতেই তাকে থাকতে হত বেশির ভাগ সময়। ১৯৯০ সালের ৫ মার্চ এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করার অপরাধে তাকে অভিযুক্ত করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন ধরে চলে আইনি প্রক্রিয়া শেষমেশ ২০০৪ সাল অর্থাৎ দীর্ঘ ১৪ বছর পরে ফাঁসি হয় তার।
তবে ‘এই শাস্তি অহেতুক’ বলে আজও মনে করেন বহু মানুষ। ধনঞ্জয়কে ফাঁসানো হয়েছিল বলেই ধারনা অনেকের। ‘গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিল ধনঞ্জয়’ এমনই ধারনা তার পরিবারের লোক ও প্রতিবেশীদের।
তার পরিবারের লোকের ধারনা ‘ আসল দোষীকে বাঁচাতে তার ঘাড়েই সমস্ত দোষ ঠেলে দেওয়া হয়’। আরজিকরকাণ্ড আবহে সঞ্জয় ঘোষের গ্রেফতারের পর বহুবার সামনে এসেছে ধনঞ্জয়ের নাম। বারবার ধনঞ্জয়ের তুলনা টানা হয়েছে। এরপর প্রায় ২০ বছর পরে ফের রিওপেন হতে চলেছে সেই কেস।
গত সোমবার ড. চন্দ্রচূড় গোস্বামী ও জীবন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে কলকাতার রবীন্দ্র সদন চত্বরে সুবিচার চেয়ে ধরনায় বসেন ধনঞ্জয়ের পরিজনেরা। সকলে মিলে তৈরি করেছেন পুনর্বিচার মঞ্চও।
মামলা রিওপেনের দাবিতে ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল, দেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি এবং কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের দুই প্রধান বিচারপতিকে লিখিত আবেদনও জানানো হয়েছে।
গত সোমবার আইন মন্ত্রী মলয় ঘটকের কাছে স্মারকলিপি জমা করা হয়েছে। কোনও আসামীর ফাঁসি হওয়ার ২০ বছর পর ফের কেস রিওপেন করা যায় কি না এই নিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবীদের পরামর্শ নিচ্ছে রাজ্য সরকার।
অন্য দেশেও এমন নজির আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই মামলার নথি ও যে সমস্ত আইনজীবীরা মামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁদের খোঁজ চলছে। আবারও সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানোর আর্জি জানিয়েছেন ধনঞ্জয়ের পরিজনেরা।