সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
রাম নবমী উপলক্ষে অস্ত্রের ঝনঝনানি নয়, এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আরেক সম্প্রদায়ের ঘৃণা করা বিষোদ্গার নয়, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রামনবমীর শোভাযাত্রায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে হাঁটছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। রামনবমীর শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জলের বোতল ও মিষ্টি নিয়ে অপেক্ষা করছেন মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। ভারতবর্ষের বুকে বাংলা ছাড়া এমন সম্প্রীতির ছবি আর কোথায়?
রামনবমীতে বাংলার একাধিক জায়গায় ধরা পড়েছে সম্প্রীতির ছবি। দেখা গিয়েছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষও রামনবমীতে অংশগ্রহণকারীদের মিষ্টি-লাড্ডু বিতরণ করছেন, জল খাওয়াচ্ছেন। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, ভাঙড়ের বেশ কিছু জায়গায় ধরা পড়েছে এই ছবি। আর এই বিষয়টিও প্রশংসা করলেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। বললেন, “এটাই তো চাই। সবাই ভালভাবে সেলিব্রেশন করুন।”
বিশেষ করে ভাঙড়ের কথা বলেন সিপি। ভাঙড়ে রামনবমীর মিছিলে হাঁটতে দেখা যায় শওকত মোল্লা! নিজের হাতে রাম পূজার ভোগও রান্না করেন তিনি। ভাঙড়ের বোদরাতে ঘটা করে রামনবমী পালন করলেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙরের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা। রামনবমীতে সম্প্রীতির ছবি তুলে ধরতে সিপি বলেন, “ভালভাবেই সিলেব্রেশন হচ্ছে। এটাই চাই। কোথাও কোথাও ভাল ছবি দেখলাম। স্পেশ্যালি ভাঙড় ডিভিশনে, সেখানে অন্য সম্প্রদায়ের লোক এসে জল খাওয়াচ্ছে, মিষ্টি খাওয়াচ্ছে। এগুলোই দরকার।”
রবিবার সকালে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে কাশীপুরে রাস্তায় নামেন পুলিশ কমিশনার মনোজ ভর্মা। সঙ্গে ছিলেন পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তারাও। কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে রামনবমীর শুভেচ্ছা জানান সিপি।
সিপি বলেন, “সব জায়গায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অনেক জায়গাতেই মিছিল বেরিয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত খবর পেয়েছি, ৬-৭ টা মিছিল শেষ হয়েছে। কোথাও কোনও অশান্তির খবর পাইনি। দুপুর তিনটে থেকে অনেক জায়গাতেই মিছিল বেরোবে। সব জায়গাই সিনিয়র অফিসারকে ঘুরে দেখেছেন।”
হাওড়ায় অস্ত্র নিয়ে মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কলকাতা হাইকোর্ট। সে প্রসঙ্গে সিপি বলেন, “কোথাও অস্ত্র দেখলে, আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে ফোর্সকে বলা আছে। তবে মনে হয় না, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য কোথাও হবে।”