সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
যাত্রা উৎসব শেষ হতেই শুরু হল নাট্যমেলা। নাটক বা থিয়েটারকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে প্রতিবছর আয়োজন করা হয় নাট্যমেলার।
শুধুমাত্র এবছর এই নাট্যমেলার জন্য ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছে রাজ্য সরকার । পাশাপাশি ন্যাশনাল থিয়েটার ফেস্টিভ্যালের জন্য খরচ করা হয়েছে ৮০ লাখ টাকা। থিয়েটারের প্রসারের লক্ষ্যে সব মিলিয়ে এবছর রাজ্য সরকার ও তথ্য সংস্কৃতি দফতর প্রায় দেড় কোটি থাকা ব্যয় করেছেন।
থিয়েটারের উৎসবের জন্য সারা দেশের মধ্যে অন্য কোন রাজ্য এত টাকা ব্যয় করেন না উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এছাড়াও থিয়েটারের নানান দিক নিয়ে আলোচনা করলেন তিনি। শুরুর থেকে থিয়েটারের দর্শকেরা কীভাবে বদলেছে আলোচনা করলেন তা নিয়েও।
প্রতিবছরের ন্যায় নাট্যমেলার জন্য সেজে উঠেছে রবীন্দ্রসদন চত্ত্বর। তবে এবারের নাট্যমেলা একটু অন্যরকম। নাটকের পাশাপাশি প্রতিদিন একতারা মুক্তমঞ্চে চলবে নাটক নিয়ে আড্ডা। এবং প্রতিদিন আড্ডা সেশনের আগে থাকছে একটি করে লোকনাটক।
বুধবার রবীন্দ্র সদন প্রেক্ষাগৃহে উদ্বোধন হল ২৪ তম নাট্য মেলার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, নাট্য ব্যক্তিত্ব দেবশঙ্কর হালদার সহ অন্যান্য নাট্য ব্যক্তিত্বরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্রাত্য বসুর সম্পাদনায় সাধারণ বঙ্গ রঙ্গালয়ের সার্ধ শতবর্ষ নামের একটি বই প্রকাশ হয়। এছাড়াও নাট্যমেলার পাশাপাশি গগনেন্দ্র প্রদর্শশালাতে বাদল সরকারকে নিয়ে একটি প্রদর্শনী চলবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যাক্তিরা জানায়, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই নিয়ে চতুর্বিংশ বার আয়োজিত হচ্ছে এই নাট্যমেলা।প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বালি নাটো নাট্যদলের ‘আত্মগোপন’ নাটক দিয়েই সূচনা হয় নাট্যমেলার। বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই নাট্যমেলা চলবে আগামী ১৩ তারিখ পর্যন্ত।
প্রায় ১২০ টি নাট্যদলের অংশগ্রহণে পূর্ণদৈর্ঘ্য নাটক, স্বল্পদৈর্ঘ্য নাটক অন্তরঙ্গ নাটক, পুতুলনাটক, মূকাভিনয় মঞ্চস্থ হবে রবীন্দ্র সদন, গিরিশ মঞ্চ, মধুসূদন মঞ্চ, শিশির মঞ্চ, ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়াম, তৃপ্তি মিত্র নাট্যগৃহ (পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি ভবন)-এ।
নাট্যমেলায় মঞ্চস্থ হতে চলেছে অনসম্বল নাট্যদলের ভীতি, গড়িয়া একত্রে নাট্যদলের রেহানে..এক নাম, ফোর্থ বেল থিয়েটারস-এর হ্যাপি ডে, আলিপুর অহনা নাট্যদলের চার প্রহর সহ অন্যান্য বহু নাটক। আমাদের সমাজের বিভিন্ন আঙ্গিককে মানুষের সামনে তুলে ধরার একটি অভিনব উপায় হল ‘নাটক ‘।

তাই আমাদের সকলের উচিত নাটককে টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, সিনেমা -র যুগে বাঁচিয়ে রাখতে নাট্য মেলার এই উৎসবে সামিল হওয়া। পাশাপাশি আগামী প্রজন্মতেও যাতে নাটকের দলগুলির অভিনয় সত্তা বেঁচে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা।