সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
“আমরা সবসময় ভারতীয় সেনার জন্য গর্বিত। তারা সবসময় সাহসিকতার সঙ্গে পারফর্ম করেন। তাঁদের শারীরিক সক্ষমতা ও মানসিক দৃঢ়তা প্রচন্ড। তাঁরা আত্মত্যাগ করেন। দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেন। রাজ্যের তরফে আমি সেনাকে সম্মান জানাই। আমি সেনাকে সম্মান জানাই।” ১৯৭১ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের কবর থেকে ভারতীয় সেনা যেভাবে লড়াই করে আজকের বাংলাদেশকে স্বাধীনতা দিয়েছিল সেই বিজয় দিবস উপলক্ষে কলকাতার রেস কোর্স ময়দানে ভারতীয় সেনাকে এভাবেই স্যালুট জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার রেসকোর্সে ভারতীয় সেনার ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশ থেকেও প্রতিনিধিরা এসেছেন কলকাতায়। এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ভারতীয় সেনার প্রতি তাঁর অন্তরের শ্রদ্ধা, সম্মান প্রদর্শন করেন।
পাশাপাশি বক্তব্যের শেষে তিনি একেবারে দৃপ্ত গলায় জানিয়ে দেন, জয় বাংলা। সম্প্রতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হয়েছে জয় বাংলা স্লোগান। তবে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানেও সেই জয় বাংলা স্লোগান শোনা গেল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মুখে।
মমতা বলেন, “আজকে আপনারা বিজয় দিবস পালন করছেন। মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন তাঁদের মধ্য়ে কয়েকজন উপস্থিত আছেন। আমি বাংলার রোল , ইন্ডিয়ার রোল , তাদের ভূমিকা কখনওই ভুলতে পারব না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যাঁরা আত্মবলিদান দিয়েছেন তা কিছুতেই ভুলতে পারব না। তবে আমি বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানি না। আমাকে জানানো হয় না। এই বিষয়ে কিছু বলাটা আমার পক্ষে ঠিক হবে না। বিষয়টি ভারত সরকারের উপর ও ভারতীয় সেনার উপর নির্ভর করছে।”
সম্প্রতি বাংলাদেশের টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবার বাংলায় তথা ভারতবর্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান উপদেষ্টা সরকারের রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের সাময়িক অবনতি হয়েছে সরাসরি তার উল্লেখ না করলেও আজ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তবে আমি শুভেচ্ছা জানাই বাংলাদেশ সেনা, আমাদের ভারতীয় সেনাকে আমাদের হৃদয়কে শুভেচ্ছা। আমি ক্লাস টু থ্রিতে পড়তাম। বাবা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। মাত্র ৪০ বছরে বাবা মারা গিয়েছিলেন। রোজ আমায় বলতেন কীভাবে ভারত-চিন যুদ্ধে আমাদের জওয়ানরা আত্মবলিদান দিয়েছিলেন। ১৯৬৫ ইন্দো-পাক যুদ্ধ। আমাদের জওয়ানরা কীভাবে আত্মবলিদান দিয়েছিলেন। সেই পথে ১৯৭১, ফের পাক যুদ্ধ। বাংলাদেশকে স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য যুদ্ধ। আমি মনে করতে পারি লতাজিকে ইন্দো- চিন যুদ্ধের পরে পন্ডিত নেহেরুজী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লতাজিকে বলেছিলেন একটা গান আপনি গান যার মাধ্যমে আমরা শহিদদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে পারব। এরপর মুখ্যমন্ত্রী সেই গানের দুটি লাইন উল্লেখ করেন। …তিনি নেই, তাঁর গান আজও অমর। …জো শহিদ হুয়ে হ্যায় উনকি এই গানের দুটি লাইন উল্লেখ করেন মমতা। আমরা বিজয় দিবসে স্মরণ করছি সেই শহিদদের যাঁরা বৃহত্তর কারণে জীবন দিয়েছেন, কিন্তু কখনও হারেননি।”
বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, “জয় হিন্দ জয়বাংলা।”