সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে গত সাড়ে তিন বছরে চতুর্থ বার। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ চার জন বিজেপি বিধায়ককে একমাসের জন্য সাসপেন্ড করলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও সাসপেন্ড করা হয়েছে অগ্নিমিত্রা পাল, বঙ্কিম ঘোষ এবং বিশ্বনাথ কারক। এর ফলে এক মাস বিধানসভার অধিবেশন বা আলোচনায় অংশ নিতে পারবেন না বিরোধী দলনেতা সহ ৪ বিজেপি বিধায়ক।
সরস্বতী পুজোর আয়োজনে রাজ্যে বাধা পেতে হচ্ছে, এই অভিযোগ করে বিধানসভায় মুলতবি প্রস্তাব আনা হয় বিজেপির পক্ষ থেকে। মুলতুবি প্রস্তাব পড়তে দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। মুলতুবি প্রস্তাব পড়েন অগ্নিমিত্রা পাল। মুলতুবি প্রস্তাবের উপর আলোচনা চায় বিজেপি। কিন্তু, অধ্যক্ষ জানিয়ে দেন, এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে না। এরপরই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা স্লোগান দিতে থাকেন। স্পিকারের চেয়ারের কাছে গিয়ে কাগজ ছিঁড়ে ছুড়ে দেন শুভেন্দু। এর পরই ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়করা।
বিজেপির এই আচরণের নিন্দা করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আপনারা যে আচরণ করছেন যথাযথ নয়। নিন্দা করছি।” বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ শুভেন্দুদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। শাসক শিবিরের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, শুভেন্দু অধিকারী অধ্যক্ষের দিকে তেড়ে এসে কাগজ ছুড়ে মেরেছেন বিরোধী দলনেতা। যা অধ্যক্ষ পদের পক্ষে অবমাননাকর। এই অভিযোগ তুলেই বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এবং তাঁকে সাসপেন্ড করার দাবি তোলে শাসক দল।
এর পরই চার বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করার কথা জানান অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। অধ্যক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিধানসভার বাইরে শুভেন্দু বলেন, “হিন্দুদের হয়ে কথা বলতে গিয়ে আমায় এক মাস বাইরে রাখা হয়েছে। আমি গর্বিত।”
বিরোধী দলনেতার অবশ্য পাল্টা দাবি, পূর্ব পরিকল্পিত ছক অনুযায়ী তাঁকে বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই নিয়ে চার বার আমাকে বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করা হল। চার বছরে এই নিয়ে মোট আট মাস আমাকে বিধানসভার বাইরে রাখা হল। আগামিকাল মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের ভাষণের উপরে জবাবি বক্তব্য রাখবেন। তাই তিনি যাতে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতেই আমাকে অবৈধ ভাবে সাসপেন্ড করা হল।’
আগামিকাল মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সময়ও বিজেপি বিধায়করা বিধানসভার ভিতরে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তার বদলে বিধানসভার গেটে অবস্থান বিক্ষোভ করবেন তাঁরা।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় তিনিও পাল্টা বিধানসভার গেট থেকে বক্তব্য রাখবেন বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।

শুভেন্দু বলেন, “দেখবেন, আগামিকাল মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য লাইভ স্ট্রিমিং করা হবে। আমিও বিধানসভার বাইরে বক্তব্য রাখব।” সাসপেন্ড করায় বিরোধী দলনেতা হিসেবে বিধানসভার এক মাসের ভাতাও তিনি নেবেন না বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।