শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“সবকা সাথ, সবকা বিকাশেই আমরা বিশ্বাসী। যাঁরা আমাদের ভোট দেন না দেন, কোনও অসুবিধা নেই।” রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উল্টো সুর শোনা গেল বিজেপির সদ্য প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের গলাতে। নতুন দায়িত্ব পেয়েই শমীক ভট্টাচার্য়্য বহুত্ববাদের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। এবার শমীকের সুরেই বহুত্ববাদের পক্ষে সওয়াল করলেন সুকান্ত। তিনি বললেন, “নরেন্দ্র মোদীর ফ্রিতে রেশন তাঁদের কাছে পৌঁছবেই। নরেন্দ্র মোদীর বিকাশের মডেল সবার জন্য।”
বঙ্গ বিজেপির দায়িত্ব নিয়ে ঠিক এই কথাটা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন শমীক। তিনি বলেছিলেন, “বিজেপির লড়াই কোনও সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে নয়, তবে আমরা লড়াই করছি, তাদের বিরুদ্ধে, যাদের বাড়ির ছেলেরা হাতে পাথর নিয়ে ঘুরছে, আমরা ওই পাথরটাকে কেড়ে ওখানে বই ধরিয়ে দিতে চাই। ঘুরছে মুসলমান, মারছে মুসলমান, কারা এই অবস্থা তৈরি করল? যারা আমাদের ভোট দিচ্ছেন না, যারা আমাদের থেকে দুূরে থাকছেন, যদি বিজেপিকে অচ্ছুত মনে করেন, ভোট দেবেন না। কিন্তু আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করুন, গত তিন বছরে পশ্চিমবঙ্গে যত খুন হয়েছে, তার মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা কত?”
যদিও রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, “সংখ্যালঘুরা যে আমাকে ভোট দেননি, সেটা কঠিন বাস্তব। ১ লক্ষ ১০ হাজার ভোটের মধ্যে ১ লক্ষ ৯ হাজার ৬০০ হিন্দুর ভোট পেয়েছি। আমি যে অন্যদের ভোট চাই না, তাই নয়। পাই না, এটাই কঠিন বাস্তব।”
শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট জানিয়েছেন যে তিনি সংখ্যালঘু ভোট পান না, এবং তাঁর জয় প্রধানত হিন্দু ভোটের উপর নির্ভরশীল। তাঁর এই মন্তব্য বিজেপির অভ্যন্তরীণ কৌশলগত বিভাজনের ইঙ্গিত দেয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সংখ্যালঘু ভোট এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। শমীক ও সুকান্তর বহুত্ববাদী বার্তা তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির ভোটের ভিত মজবুত করার প্রয়াস হতে পারে। তবে শুভেন্দুর কঠোর অবস্থান দলের এই কৌশলের সঙ্গে কতটা মিলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই ভিন্ন সুর ২০২৬-এর নির্বাচনে বিজেপির ফলাফলের উপর কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছে।