সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়াকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চালিয়েও প্রায় চার মাসে মূল অভিযুক্তের সাজা নিশ্চিত করতে পারেনি সিবিআই। কিন্তু মাত্র ৬০ দিনের মধ্যে জয়নগর খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের সাজা নিশ্চিত করল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দ্রুত ঘটনার তদন্ত এবং বিচার হবে।
কুলতলিতে নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনে দোষী সাব্যস্ত হল মূল অভিযুক্ত মুস্তাকিন সর্দার। বারুইপুরের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সেশন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় আজ এই রায় দেন। মুস্তাকিনকে দোষী সাব্যস্ত করল বারুইপুর পকসো আদালত। আগামীকাল শুক্রবার বারুইপুর পকসো আদালতেই সাজা ঘোষণা হবে দোষী সাব্যস্ত মুস্তাকিনের।
প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর নিখোঁজ হয়ে যায় ওই নাবালিকা। ওই রাতেই তার দেহ উদ্ধার হয়। ৫ অক্টোবর নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনে গ্রেফতার করা হয় মুস্তাকিনকে। ৭ অক্টোবর ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করা হয়। এর ২৫ দিনের মাথায়, গত ৩০ অক্টোবর পেশ হয় চার্জশিট। আজ ৬০ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর মুস্তাকিনকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। চাঞ্চল্যকর এই মামলার চূড়ান্ত শুনানিতে আজ আদালতে আসেন কুলতলির বিধায়ক গণেশ মণ্ডল। বারুইপুরের মহকুমা শাসক অতীশ বিশ্বাস ও জয়নগর থানার আইসি-সহ জেলার পুলিশ আধিকারিকরাও আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অবশেষে সেই মামলায় মুস্তাকিনকে দোষী সাব্যস্ত করা হল। কাল সাজা ঘোষণা হবে। ধর্ষণ, খুন-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছিল মুস্তাকিনের বিরুদ্ধে। এর পর চার্জ গঠন করা হয়। মোট ৬৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সাক্ষ্যপ্রমাণ অভিযুক্ত মুস্তাকিন সর্দারের বিরুদ্ধেই যায়। সরকারপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই মামলায় বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সেই তথ্যপ্রমাণই মামলার কিনারা করার ক্ষেত্রে সহায়ক হল। সরকারি আইনজীবী মুস্তাকিনের সর্বোচ্চ সাজা, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত গত অগাস্ট মাসে আরজিকরের ঘটনার পরেও মমতা বারে বারে জানিয়েছিলেন প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে যেহেতু সমর্থ্য হয়েছে কলকাতা পুলিশ, তাই অবিলম্বে তদন্ত শেষ করে তার চরমতম শাস্তির ব্যবস্থা করাই রাজ্য সরকারের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু সিপিএম এবং শহুরে মাওবাদীরা নির্যাতিতার পরিবারকে বিভ্রান্ত করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে তদন্তভার তুলে দিয়েছিল। তাই চার মাস পরেও যেখানে আরজিকরের নির্যাতিতার পরিবার বিচার পায়নি মাত্র দু মাসের মধ্যেই রাজ্য পুলিশের তদন্তে বিচার পেল কুলতলির নির্যাতিতার পরিবার।