সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
দিঘায় জগন্নাথ মন্দির ও নিউটাউনে দুর্গাঙ্গনের পরে এবার শিলিগুড়িতে বাংলার সবচেয়ে বড় শিবের মন্দির। বৃহস্পতিবার তাৎপর্যপূর্ণ ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য ইতিমধ্যেই জমি খোঁজার কাজ শুরু হয়েছে। শিলিগুড়িতে এই মন্দিরটি হবে। কনভেনশন সেন্টারও তৈরি করা হবে। বৃহস্পতিবার দার্জিলিংয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, শৈলশহরের মহাকাল মন্দিরে প্রবীণ ও বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড় সফরের শেষ দিনে শুরু থেকেই জনসংযোগ করছিলেন মমতা। এদিন সকালে রিচমন্ড হিল থেকে হেঁটে বের হন মুখ্যমন্ত্রী। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পথচলতি সাধারণ মানুষ ও পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পাহাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের থেকে কোনওরকম সমস্যা হয়েছে কি না, তাও জেনে নেন। এছাড়াও পাহাড়ে কোন কোন জায়গায় পর্যটকরা গিয়েছেন এবং সেখানকার পরিস্থিতি কেমন রয়েছে, সেসব পর্যটকদের থেকে জানেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন সকাল থেকেই খোশমেজাজে দেখা গিয়েছে মমতাকে। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় খুদেদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাদেরকে পুতুল ও চকোলেট বিলি করেন। এরপর মহাকাল মন্দিরে পুজো দিতে যান৷ পাহাড়ের জন্য শান্তি কামনা করেন৷ এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, জিটিএ’র চিফ এগজিকিউটিভ অনিত থাপা-সহ পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। এদিন মহাকাল মন্দিরে পুজো দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুজো খুব ভালো হয়েছে। অনেক পর্যটক আসতে শুরু করেছেন। আমি নিজে পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় আমি ও জেলা প্রশাসন পুলিশের সঙ্গে মিলে প্রায় দেড় হাজার পর্যটকদের নীচে পাঠিয়েছিলাম। এখন অনেক পর্যটক আসছেন৷ দার্জিলিং যাওয়ার এখন দুটো রাস্তা খোলা রয়েছে। একটি তিনধারিয়া ও অন্যটি পাঙ্খাবাড়ি। 15 থেকে 20 দিনের মধ্যে রোহিনীর রাস্তাও খুলে যাবে। আমি পর্যটকদের পাহাড়ে আসার জন্য আবেদন করছি। এই মন্দিরে অনেক বয়স্ক ও বিশেষভাবে সক্ষমরা আসেন। তাদের পক্ষে ওপরে ওঠা সম্ভব নয়। তার জন্য আমি বলেছি। জেলা প্রশাসন জিটিএ’র তরফে ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও আমার একটা উদ্দেশ্য রয়েছে। আমরা একটা জগন্নাথ ধাম করেছি দিঘায়। একটা দুর্গাঙ্গন করছি রাজারহাটে। সেখানে ট্রাস্ট তৈরি করা হয়েছে। ওটার জমিও চিহ্নিত করা হয়েছে। আর্কিটেকচারটাও আমি দেখে নিয়েছি। আমি দার্জিলিংয়ের জেলাশাসককে শিলিগুড়ির আশেপাশে একটা ভালো জমি দেখতে বলেছি।’
দিঘাতে ইতিমধ্যেই পুরীর জগন্নাথ ধামের আদলে মন্দির তৈরি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এও জানিয়েছেন, ইকো পার্কের ঠিক উলটো দিকের জমিতেই ‘দুর্গাঙ্গন’ তৈরি করা হবে। যার জন্য খরচ হবে আনুমানিক ২৬২ কোটি টাকা। এবার শিবমন্দির তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এই মন্দিরটা কবে প্রতিষ্ঠিত হবে বা কাজ শুরু হবে তা এখনই জানাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাথমিকভাবে জমি নির্বাচনের কাজ শুরু হয়েছে। সেটা পাওয়া গেলেই মন্দিরের কাজ শুরু হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মমতা বলেন, ‘আমরা একটা জগন্নাথ ধাম করেছি দিঘায়। রাজারহাটে দুর্গাঙ্গন হবে। সেটার জমি পাওয়া গেছে। টেন্ডারে দেওয়া হয়েছে। নকশা বা স্থাপত্য কেমন হবে সেটা দেখে নিয়েছি। শিলিগুড়িতেও কনভেনশন সেন্টার হবে। সেজন্য জেলাশাসককে বলেছি, জমি দেখে রাখতে। তার পাশে আমি একটা বড় মহাকাল মন্দির করব। যেখানে সবথেকে বড় শিব ঠাকুর তৈরি করব। তার আগে আমাকে একটা ট্রাস্ট করতে হবে। তাদের দিয়ে করাতে হবে। সবাইকে নিয়ে আমরা নিজেরা করব।’