সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
আরজিকর কাণ্ডে সিপিএম যেভাবে আন্দোলনে নেমেছে ধর্ষণ বিরোধী বলে এবং কখনো শুভেন্দু অধিকারী আবার কখনো বা অগ্নিমিত্রা পালকে ধর্না মঞ্চ থেকে আক্রমণ করেছে, তার প্রেক্ষিতে সিপিএমকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে দেবী দুর্গার ত্রিশূল হাতে সিপিএম জার্সি পড়া অসুরকে তাড়া করার একটি কার্টুন পোস্ট করে লকেট লিখেছেন,
“গণহত্যা আর সিপিএম। এই বাংলায় দুটি প্রায় সমার্থক শব্দ। সত্তরের সেই যুক্তফ্রন্টের আমলে ক্ষমতার শরিক হয়েই গণহত্যায় হাত পাকানো শুরু বর্ধমানের সাঁইবাড়ি গণহত্যা দিয়ে আর শেষ দক্ষতার শীর্ষে থেকে ক্ষমতার বিদায় লগ্নে পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতাই গণহত্যার মাধ্যমে! মাঝের সময়টা মরিচঝাঁপি, বিজন সেতু, কান্দুয়া, বানতলা, কেশপুর, ছোট আঙারিয়া, নানুর, ধর্মতলা, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের রক্তাক্ত ইতিহাস বহন করছে সিপিএমের গণহত্যার পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার চূড়ান্ত প্রদর্শন।
https://x.com/me_locket/status/1835614184769253740?t=eLxRVmnmbqfWHXe187l_Gg&s=08
বাংলার মানুষের মনে যতদিন সাঁইবাড়ির মাকে ছেলের রক্তমাখা ভাত খাওয়ানোর স্মৃতি অমলিন থাকবে, যতদিন মরিচঝাঁপির নেতাজিনগরের অশক্ত মাকে তাঁর ছোট্ট সন্তানের সামনে ধর্ষণ করে খুন করার স্মৃতি ধূসর না হবে, যতদিন বিজন সেতুর ওপর চোদ্দোজন আনন্দমার্গীকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়ার নির্মম স্মৃতি মনে গেঁথে থাকবে, যতদিন অনিতা দেওয়ানকে ধর্ষণ করে তাঁর যৌনাঙ্গে টর্চ ঢুকিয়ে তাঁকে হত্যা করার ঘটনা দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করবে, যতদিন কান্দুয়ার গরিব ভাইদের হাতের কবজি কেটে নেওয়ার মতো অমানবিক নৃশংসতা মনের গভীরে বাসা বেঁধে থাকবে, যতদিন কলকাতার রাজপথে তেরোজন যুবককে গুলি করে মেরে ফেলার ভয়াবহ স্মৃতি জীবন্ত থাকবে, যতদিন কেশপুর, ছোট আঙারিয়া, নানুর, নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর ও নেতাইয়ের গরিব মানুষগুলোর রক্তাক্ত নিথর দেহগুলোর ছবি চোখের সামনে ভাসবে ততদিন এ বাংলার মাটিতে সিপিএমের কোনও ক্ষমা নেই, কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই, ইনসাফ চাওয়ার নাটক করার অধিকার তো নেইই। ক্রমাগত ক্ষয়িষ্ণু সিপিএম শেষ ইজ্জতটুকু কখনও বিজেপিকে দান করে, কখনও কংগ্রেসকে দান করে অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখার মরিয়া চেষ্টা করছে।
নেতাই গণহত্যা মামলায় ন’জন নিরস্ত্র গ্রামবাসী খুনের তদন্তের চার্জশিটে দোষী অভিযুক্ত সিপিএমের বিনপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক অনুজ পাণ্ডে-সহ ১৯ জন সিপিএম নেতা-কর্মী গ্রেফতার, বিচার প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যেই মানুষের রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টায় তারা ইনসাফ চাওয়ার নামে আবারও বাংলার বুকে সেই গণহত্যার, গণধর্ষণের দিনগুলো ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। ওদের বর্জন করুন। আবার সেই পুরনো রক্তাক্ত দমবন্ধ করা গণহত্যা আর গণধর্ষণের ‘গণতন্ত্রের’ রাস্তায় ফিরে যে যাবেন না, প্লিজ।”