নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর স্বাস্থ্যশিবির ঘিরে ফের তীব্র রাজনৈতিক তরজা। শনিবার সকালে (Nandigram Health Camp) শুভেন্দুর আয়োজিত এক স্বাস্থ্যশিবিরে হাজির ছিলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য (National Commission for Women Member) ডাঃ অর্চনা মজুমদার। এই ঘটনাই আগুনে ঘি ঢেলেছে রাজ্য রাজনীতিতে।
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, জাতীয় মহিলা কমিশন (NCW) আজ কার্যত ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) একটি “শাখা গণসংগঠন”-এ পরিণত হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, সাংবিধানিক নিরপেক্ষতা হারিয়ে কমিশন এখন বিজেপির প্রচারযন্ত্রের অংশ।
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন —
“নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর আয়োজিত স্বাস্থ্যশিবিরে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য ডাঃ অর্চনা মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। এবার বোঝা গেল কেন আমরা বলি (NCW is BJP’s affiliate organization)। মহিলা কমিশনের মুখোশ এবার পুরো খুলে গেল।”
কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ডাঃ অর্চনা মজুমদার নিজে একজন সক্রিয় বিজেপি নেত্রী (Active BJP Leader)। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপির টিকিটে লড়েছিলেন। পরাজয়ের পর তাঁকে রাজনৈতিক পুনর্বাসন দিয়েই কেন্দ্রের মোদি সরকার (Modi Government) বসিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল যে দেশের সাংবিধানিক সংস্থাগুলি (Constitutional Institutions) এখন বিজেপির নিয়ন্ত্রণে। শুধু মহিলা কমিশন নয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (National Human Rights Commission) সহ একাধিক কমিশনেই বসানো হয়েছে বিজেপির ঘনিষ্ঠ নেতাদের।
নন্দীগ্রামের তৃণমূল ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গের প্রশ্ন —
“জাতীয় মহিলা কমিশন নিরপেক্ষ সংস্থা। তাহলে কমিশনের সদস্য কী করে সরাসরি বিজেপি বিধায়কের (BJP MLA) আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশ নেন? এটা সাংবিধানিক শপথ ভঙ্গের সামিল।”
তিনি আরও বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বুঝে গিয়েছেন, এলাকার মানুষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) উন্নয়ন মডেল চায়। তাই এখন সেবা প্রকল্পের নামে রাজনৈতিক প্রচার চালাচ্ছেন।”
তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি সরকার কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে (Central Agencies) এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। ভোট পরবর্তী হিংসা থেকে সন্দেশখালি—প্রতিটি ঘটনাতেই দেখা গেছে, কমিশনের প্রতিনিধি দলে বিজেপি ঘনিষ্ঠ মুখদের উপস্থিতি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিতর্ক (NCW-BJP Nexus Controversy) বিজেপি-বিরোধী শিবিরকে নতুন করে আক্রমণের সুযোগ দেবে। ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল এই ঘটনাকে হাতিয়ার করতে পারে বিজেপির “দলীয় প্রশাসন” প্রমাণে।
অন্যদিকে, বিজেপি শিবিরের দাবি, জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। তাঁরা মানুষের কল্যাণের কাজ করছেন। কিন্তু নন্দীগ্রামের এই ছবি রাজনৈতিকভাবে কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘাতকে আরও উসকে দিল।