শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“১৫ তারিখের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে তালিকা না দিলে ২১ তারিখ নবান্ন অভিযান করা হবে। পতাকা ছেড়ে অরাজনৈতিক স্বার্থে নবান্নের সামনে গিয়ে ধরনা দেব। চেয়ার থেকে নামিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করব।” এভাবেই আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দায়ী বলে আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর। বিরোধী দলনেতার স্পষ্ট দাবি, একাধিকবার সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও কিছুতেই যোগ্য অযোগ্যদের তালিকা সুপ্রিম কোর্টে দেয়নি রাজ্য।
শুভেন্দু বলেন, “২৬ হাজারের মধ্যে ৭ হাজারকে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে নেতাজি ইন্ডোরে। যোগ্যদের পাস দিয়েছি, তারাই ভিতরে গিয়েছে, বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাহলেই তো স্পষ্ট কারা যোগ্য, কারা অযোগ্য। আজকে এসএসসি যে রিভিউ পিটিশন করেছেন, আপনি যোগ্যদের তালিকাটা আদালতে ফেলে দিন। রাজ্য সরকারের কাছে সুযোগ রয়েছে, তালিকা দিন। নাহলে ১৯ হাজারের সঙ্গে বঞ্চনা করা হবে।”
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে মুখ্যমন্ত্রী আক্রমণ করেছেন বলে দাবি শুভেন্দুর। এদিন বৈঠকে বাম বিজেপিকে নিশানা করে মমতা বলেন, মুখ-মুখোশকে চিনতে হবে। সেপ্রসঙ্গে পাল্টা বলতে গিয়ে বিধানসভার বাইরে বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর। তিনি বলেন, “মুখোশ মুখ্যমন্ত্রী, মুখ অভিষেক, যে চাকরি খেয়েছে, পার্থকে দিয়ে। এর নেপথ্যে অর্থ রয়েছে, তার সবচেয়ে বড় উপভোক্তা মমতার বাড়িতে। সুজয়কৃষ্ণ ৭৩ মিনিটে অডিও ক্লিপে অনেকবার অভিষেকের নাম বলেছে।”
বিরোধী দলনেতার আরও বক্তব্য, “সুপ্রিম কোর্টে ১৬ বার শুনানি হয়েছে। একাধিকবার যোগ্য অযোগ্যদের তালিকা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একবারও যোগ্য অযোগ্যের তালিকা দেয়নি রাজ্য সরকার। সুযোগ পেয়েও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এসএসসির অটোনমি শেষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এসএসসিকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়নি সরকার। সিবিআইয়ের জন্য যোগ্যরা নিজেদের যোগ্য বলতে পারছেন। কিছু যোগ্যদের শনাক্ত করেছে সিবিআই। না হলে সামাজির বিপর্যয় আরও বেশি হত।”
ছাব্বিশে বিজেপিকে সরকারে আনলে এক মাসের মধ্যে যোগ্য অযোগ্য তালিকা বের করে বিচার এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি শুভেন্দু অধিকারীর। এদিন নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকে কারও চাকরি যাবে না বলে আশ্বাস দেন মমতা।
পাল্টা শুভেন্দু এদিন বললেন, “চাকরিহারাদের সিভিক টিচার করে দেবে, ১০ হাজার টাকা করে দেব, এটাই প্ল্যান বি, সি? আমরা প্ল্যান এ চাই। অভিজিৎ গাঙ্গুলির রায় মেনে নিলে ১৯ হাজার শিক্ষকের এই দুরবস্থা হত না।”
দরকারে বিজেপি বিধায়কদের বেতন থেকে আইনজীবীর বেতন দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন শুভেন্দু অধিকারী।