সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
শুভেন্দু অধিকারী এবং সুকান্ত মজুমদারের যুগলবন্দিতে বাংলায় ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়েছে তাকে। অথচ বাংলায় বিজেপিকে আজকের শক্তিশালী জায়গায় নিয়ে আসার পিছনে সবথেকে বড় অবদান সেই দিলীপ ঘোষের।
এবারে দলের মধ্যেই বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত হয়ে থাকা দিলীপ ঘোষ তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বলে নতুন করে জল্পনা শুরু হলো তার নিজের বক্তব্যেই
“ছ’টাতেই হারব, আগেই জানতাম” উপ নির্বাচনের ভরাডুবির পরে মুখ খুলেই বললেন দিলীপ ঘোষ
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর রাহুল গান্ধীর মধ্যে রীতিমত তুলনা টানলেন দিলীপ ঘোষ। অভিষেকের তুলনা করলেন। আর রাহুল গান্ধীর তীব্র সমালোনা করলেন। বিজেপি নেতার কথায় অভিষেক রাহুলের তুলনায় ভাল নেতা। দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। বর্তমানে তিনি বিজেপিতে কিছুটা হলেও কোনঠাসা বলে দাবি করেন তাঁর অনুগামীরা।
দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাহুল গান্ধীর থেকে ভাল নেতা বলে মনে করি। অভিষেকের কথাবার্তা অনেক বুদ্ধিদীপ্ত মনে হয় আমার।’ এখানেই শেষ নয়। দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, ‘আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাহুল গান্ধীর তুলনায় ভাল নেতা বলে মনে করি। রাহুল গান্ধী ৩০-৪০ ভোট হেরেছেন। তিনি রিজেক্ট হয়ে গেছেন একপ্রকার।’ তাঁর কথায় অভিষেক উন্নতি করছেন আর রাহুল গান্ধীর অবনতি হচ্ছে।
তবে দিলীপ ঘোষ আরও স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাহুল বা অভিষেক কেউই তৃণমূল স্তর থেকে লড়াই করে উঠে আসেননি। এর পরিবারিক সূত্রে নেতা হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এদের ইমেজ এখনও তৈরি হয়নি। এদের ইমেজে পার্টি চলেও না। এরা পারিবারিক ভাবে রাজনীতিতে এসেছে। একটি শক্তপোক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে রাজনীতি করছে। তাঁর বক্তব্যে ভোটে জেতাতে এরা কতটা পরারবে তার জন্য এখনও এদের পরীক্ষা দিতে হবে।
৬ বিধানসভা উপনির্বাচনে হারের জন্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটের নামে প্রহসন করার অভিযোগ তুললেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শনিবার দুপুরে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আমি তো জানতাম ৬টাতেই হারব। অনেক জায়গায় তো বিরোধীরা কত শতাংশ ভোট পাবে সেটাও তৃণমূলই ঠিক করে।
এদিন দিলীপবাবু বলেন, ‘ভোট ওরাই করায় ওরাই জেতে। সিতাইয়ের আগে দিনহাটাতেও উপ নির্বাচন হয়েছিল, দেখে নিন। ৯০ শতাংশ ভোট ওরাই পায়। ভোট করতে দেয় না। সিতাইয়ে এবারও প্রচার করতে গিয়েছিলাম গ্রামে। লোক অন্য কথা শুনছে না। বলছে, ভোট দিতে বেরবো কি না বাড়ি থেকে। ভোট দিতে পারব কি না? এই পরিস্থিতে ভোট হয়। তাই আমরা খুব বেশি প্রত্যাশা করিনি ওখান থেকে।’
উপনির্বাচনে হারে কি অস্বস্তিতে বিজেপি? দিলীপবাবু বলেন, ‘এতে অস্বস্তির কিছু নেই। যা হওয়ার কথা ছিল সেটাই হয়েছে। জানতাম ৬টাতেই হারব। জেতার কোনও চান্সই নেই। আমি তো কমপক্ষে জানতাম। বাকিরা কে কী বলেছে জানি না। আমি প্রচার করেছি, গেছি, পরিস্থিতি দেখেছি। কম বেশি হতে পারে ভোট ইত্যাদি। সেটা হয়েছে। কোথাও বেশি ভোটের ফারাক, বিশেষ করে হাড়োয়া ও সিতাইয়ে ভোট ওরাই করাবে। বিরোধীরা কত শতাংশ ভোট পাবে সেটা ওরাই ঠিক করবে। তালডাংরা আমার মনে হয়েছিল একটু ভালো হবে। আর মাদারিহাটেও লড়াই হবে ভেবেছিলাম।’
শনিবার পশ্চিমবঙ্গের ৬টি বিধানসভা উপ নির্বাচনের ভোটগণনা হলে দেখা যায় ৬টিতে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এর মধ্যে একমাত্র মাদারিহাট কেন্দ্রটি ছিল বিজেপির দখলে। সেটিও ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। হাড়োয়া, সিতাই, তালডাংরা, মেদিনীপুর ও নৈহাটিতে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান বেড়েছে।