শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
‘যারা আজ আত্মপক্ষ সমর্থন না করে এই রায় দিলেন তাদের অবস্থা খারাপ হবে। পাকিস্তানের নির্দেশে এইসব হয়েছে।’ বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সোমবার বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করার পর এভাবেই ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করলেন বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হাসিনা উদারচেতা। বাঙালি সংস্কৃতিকে রক্ষা করতেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গাওয়া গানকে জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা দিয়েছিলেন। অবিভক্ত বাংলার ঐতিহ্য রক্ষা করার কাজ করতেন তিনি।’ শুভেন্দুর কথায়, এমন একজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে রাজনীতির বাইরে গিয়ে একজন বাঙালি হিসেবে তাঁর প্রতিক্রিয়া হবে। কিন্তু বিদেশ ইস্যুতে তিনি আর মন্তব্য করবেন না।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে তৃণমূল যেভাবে লাগাতার প্রতিবাদ করে চলেছে, সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘তৃণমূলের ভেঙে পড়ার কারণ পরিষ্কার। মৃত ভোটার। এ জন্যই আতঙ্কে ঘুম হচ্ছে না। প্ল্যান বি, প্ল্যান সি বানাতে হচ্ছে।’ বিকেলবেলা ক্যামেরা অন করে হোক কী অফ করে, সকালের পোশাক বদল করে বিকেলে আরও একটা পোশাক পরে ভোট দেওয়া হয়। মাঝে মাঝে ক্যামেরায় দাঁড়ি কাটার ফোম মেরেও ভোটদান চলে। কোনও বুথে তো ডবল ভোটও দেওয়া হয়। এসআইআর হলে এই সব কাণ্ড আর করা যাবে না, তাই ঘুম উড়েছে তৃণমূলের বলে দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই ১৩ লক্ষ ডবল এন্ট্রির ‘প্রমাণ’ দিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সিইও দফতরে গিয়ে এই সংক্রান্ত তথ্য জমা দেন তিনি। বিপুল নথি জমা দিয়ে তিনি দাবি করেন – ভোটার তালিকায় ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার ডবল এন্ট্রি রয়েছে। সেই তথ্যের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেবই দেওয়া হয়েছে কমিশনে। শুভেন্দু অধিকারীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার নাম রয়েছে যাদের ডবল বা ট্রিপল এন্ট্রি রয়েছে। কিন্তু অন্য ইস্যুতে কমিশনের ভূমিকার সমালোচনাও করেছেন তিনি। অভিযোগ, ৫ হাজার ৭০০ বিএলও-র রাজনৈতিক পরিচয়সহ অভিযোগ জমা দেওয়ার পরও কমিশন এখনও পর্যন্ত কোনও রিপোর্ট দেয়নি।

বিজেপির তরফে এও দাবি করা হয়েছে, কমিশন জানিয়েছে তারা ৭০ শতাংশ রিপোর্ট পেয়েছে, তবে তার সত্যতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আরও জানান হয়েছে, এ পর্যন্ত ৩০০ জন বিএলও বদলি করা হলেও মূল অভিযোগের সুরাহা হয়নি। মৃত ভোটার নিয়ে বঙ্গ বিজেপি দাবি করেছে, নন-আধার মৃতের সংখ্যা ১৩ লক্ষ, আধার-সংযুক্ত মৃতের সংখ্যা ৩৩ লক্ষ। এই তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জমা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিজেপির দাবি, যাদের ভাতা বন্ধ হয়েছে (যেমন মৃত ভোটারদের), সেই তথ্য সরকার থেকে কমিশন যেন সরাসরি সংগ্রহ করে।