সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
বাংলার বিধানসভায় অপরাজিতা বিল পাসের ক্ষেত্রে বিজেপি পরিষদীয় দল সম্পূর্ণ সমর্থন দিলেও আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিলের প্রস্তাব রাখার আগে আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই বক্তব্য রাখার সময় তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে একেবারে নজিরবিহীন আক্রমণ করেন। তবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এই বিলে সমর্থন জানিয়েছেন। তবে সেই সঙ্গেই ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি বিধানের ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, সংখ্যা শেষ কথা বলে না। শেষ কথা বলে জনগন। বুদ্ধবাবু বলেছিলেন আমরা ২৩৫ তোমরা ৩০। তখন আমিও ছিলাম। এই বিল নতুন কিছু নয়। এই বিল হল আন্দোলন থামাও , সরকার বাঁচাও। নজর ঘোরাও।
এরপরই বিস্ফোরক সব অভিযোগ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ৯ অগস্ট ৩৬ ঘণ্টা ডিউটি করিয়ে খুন করা হয়েছে সরকারি কাস্টডিতে। দেশ জুড়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। পাকিস্তানের ডাক্তারদের সংগঠন বিবৃতি দিচ্ছে। এই লজ্জা রাখব কোথায়? সরকারি জায়গায় যেভাবে ডিউটিতে ডেকে নিয়ে এসে চিকিৎসক ছাত্রীকে পাশবিক অত্যাচার করে হত্যা করা হয়েছে তার নিন্দা হওয়া উচিত। সারা বিশ্ব থেকে যে প্রতিক্রিয়া আসছে তাতে আমাদের লুকনোর ভাষা নেই। উই ওয়ান্ট জাস্টিস। জাস্টিস ফর আরজি কর। জুনিয়র ডাক্তাররা বসে আছেন সারা রাস্তায়। তাদের দাবি পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ। তাঁকে কি সরানো যায় না? সব ভেঙেচুরে তছনছ করে দিয়েছে। এই বিল সরকার বাঁচাতে। এই বিল দৃষ্টি ঘোরাতে।
তিনি আরও বলেন, ” মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। ন্যায় সংহিতায় তো সব কভার করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের কথাও আছে। নির্ভয়ার সময় মৃত্যুদণ্ড হয়নি? নতুন কিছু না। শুধু আন্দোলন থামাও, দৃষ্টি ঘোরাও। এর বাইরে আর কিছু নেই। ”
রাজ্য সরকারের কাছে প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ” কেন্দ্রীয় সরকার পক্সো, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট নিয়ে যা বলেছে সেগুলো একটাও রাজ্য করেনি। কেন করেনি? আপনার পারফরম্যান্স বিচার হবে না? ”
তৃণমূল সরকারকে বিধানসভাতেই খোঁচা দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, ” রাজ্য সরকার রিপোর্ট পাঠানো বন্ধ করে দিল। ২০১৬ সালে দার্জিলিংয়ে একটা ঘটনা ঘটল। ২০২২ সাল জলপাইগুড়ি। ২৩ সালে আবার ঘটনা, মিরিক, শিলিগুড়িতে। ২৪ সালে আবার জলপাইগুড়ির ঘটনা। এগুলো সিবিআই নেয়নি। কিছু করতে পেরেছেন আপনি? ”
এদিন শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হিসেবে যথেষ্ট জোরালো কণ্ঠস্বর রাখেন। স্পর্শকাতর বিষয় বলেই এবার শাসক দলের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়নি। শাসক দল তো বটেই মুখ্যমন্ত্রীকেও নিশানা করলেন তিনি। বিধানসভাতেই বললেন, ” দফা এক, দাবি এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ।” এদিন শুভেন্দু আরও বলেন, ” গোটা রাজ্যের কথা বলতে গেলে সময় পাব না। ২০২১ সালের পর বগটুই, হাসখালি, সন্দেশখালির ঘটনা। ময়নাগুড়িতে নগ্ন করে হাঁটানো। সিবিআই নেয়নি। পুলিশ অ্যাকশন নিয়েছে? ” কামদুনি মামলা প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ” কামদুনির কেসে কত আইনজীবী বদলেছেন? ১৪ জন। ২০১৬ থেকে ২৩ কী কী ঘটেছে দেখুন। তারপরও আসামিরা বেকসুর খালাস।”