রঞ্জন দাস। কলকাতা সারাদিন।
ফের সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘের হামলা। কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে গুরুতর জখম হলেন কুলতলীর মৈপিঠ কোস্টাল থানার নগেনাবাদের বাসিন্দার শুকদেব সাঁপুই। গত ২৯ নভেম্বর রায়দিঘি রেঞ্জের নলগোঁড়া বিট থেকে সরকারি অনুমতিপত্র নিয়ে সুন্দরবনের কলস দ্বীপে কাঁকড়া ধরতে যান শুকদেব সাঁপুই, মনোরঞ্জন সাঁপুই, বিশ্বজিত মণ্ডল, গনেশ মিদ্যে-সহ বেশ কয়েকজন।
একটানা কয়েকদিন ধরে কাঁকড়া ধরার পর গতকাল সকালে কলস দ্বীপের কাছে তাঁরা কাঁকড়া ধরার বেড়ি ফেলেছিলেন। তখনই ঘটে যায় চরম বিপত্তি।
হঠাৎই খাঁড়ি লাগোয়া সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে নৌকার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রকাণ্ড এক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। সুকদেব সাঁপুইয়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘটি। নৌকায় থাকা ওই ব্যক্তির সঙ্গীরা তাঁদের কাছে থাকা লাঠি, বাঁশ নিয়ে পাল্টা বাঘকে আক্রমণ করে। উপর্যুপরি ঘায়ে বাঘ সুকদেবকে ছেড়ে জঙ্গলে চলে যায়। এরপরেই গুরুতর জখম অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে নিয়ে তাঁর সঙ্গীরা স্থানীয় নগেনাবাদ এলাকায় গ্রামীণ একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান।
তবে সুকদেব সাঁপুইয়ের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতিতে তড়িঘড়ি তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক। পরে সুকদদেবকে কলকাতায় চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন সুকদেব।
এদিকে বাড়িতে একমাত্র রোজগেরে সদস্যের এহেন পরিণতিতে দিশেহারা সুকদেব সাঁপুইয়ের পরিবার। শুকদেবের স্ত্রী বাসন্তী সাঁপুই বলেন, “আমার স্বামী জঙ্গলে গিয়েছিলেন। বাঘ হামলা করেছে। ওকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেছে।” শুকদেবের এক সঙ্গী গনেশ মিদ্যে বলেন, “আমরা কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলাম। নৌকায় ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ। আমরা পাল্টা আক্রমণ করায় বাঘ পালায়। ওনাকে (শুকদেব সাঁপুই) নিয়ে প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছিলাম। তারপর ওকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”