সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“গুঞ্জনের তো কিছু নেই। এটা মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত। উনি আমাকে হিডকোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উনিই আমার থেকে দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন।” শুক্রবার নিজেই স্বীকার করে জানালেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। হিডকোর চেয়ারম্যান পদ থেকে ফিরহাদ হাকিমকে সরিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সন্ধেয় এই খবরের ‘সত্যতা’ স্বীকারও করে নিয়েছেন কলকাতার মেয়র তথা পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
এবার মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে হিডকো। পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ছিলেন হিডকোর চেয়ারম্যান। এবার হিডকোর কাজ সরাসরি দেখবে মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে থাকা বিভাগ। পার্সোন্যাল অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রিফর্মস বিভাগের অধীনে আনা হল হিডকোকে। যে বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। ফলে এবার থেকে হিডকোর কাজ সরাসরি দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলবার টক টু মেয়র অনুষ্ঠানের শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “যা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই হয়েছে। তিনি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, নিশ্চয়ই ভালো বুঝেই নিয়েছেন।” ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, “যে পদগুলি মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন, তিনি সেগুলি যাকে দেবেন তার উপরেই নির্ভর করবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে তার কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। আমি দলের একজন অনুগত সৈনিক, তিনি যা দায়িত্ব দেবেন, সেটাই পালন করব।”
তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছুটা আক্ষেপের সুরও শোনা যায় ফিরহাদের কণ্ঠে। তিনি বলেন, “আমার কাছে অনেক কাজ এবং দায়িত্ব রয়েছে। তবে দলের সাংগঠনিক কাজে লাগাবেন মনে করে মুখ্যমন্ত্রী যদি আমাকে সরিয়ে দেন, তাতেও কোনো আপত্তি নেই।”
মেয়রের এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে নতুন গুঞ্জনের সৃষ্টি করেছে। কেন হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। তবে ফিরহাদের কথায় স্পষ্ট, মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে এবং তিনি দলের প্রতি অনুগত থাকতে বদ্ধপরিকর। রাজারহাট এবং নিউটাউনে উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে দেখাশোনা করে হিডকো। নিউটাউনে নগরের যাবতীয় পরিকল্পনা করেছে হিডকো।
এই হিডকোর চেয়ারম্যান ছিলেন ফিরহাদ হাকিম। ফিরহাদ হাকিম তিন বছর আগে এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এর আগে রাজ্যের প্রাক্তন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব দেবাশিস সেন হিডকোর চেয়ারম্যান ছিলেন। রাজনৈতিক মহলে কিছু মন্তব্য শোনা গেলেও, তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে এটি বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে নয়, বরং সংগঠনের কাজে বেশি মনোনিবেশ করার উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।