তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড ডাঃ শান্তনু সেন ও আরাবুল ইসলাম। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের কথা জানান তৃণমূল সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। সাসপেন্ডের কারণ জানানো না হলেও জানা যায়, দুই নেতার বিরুদ্ধে দল বিরোধী কাজের অভিযোগ আছে। ডাঃ শান্তনু সেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ।
অন্যদিকে আরাবুল ইসলাম ভাঙড় ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি। ২০০৬ সালে তিনি ভাঙড়ের বিধায়ক হয়েছিলেন। এই দুই নেতার বিরুদ্ধে নানা সময়ে নানা অভিযোগ উঠছে। দল থেকে বারবার তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে। তাও দুই নেতা নানা সময়ে দল বিরোধী কাজ চালিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ।
বর্তমানে ভাঙড়ে আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিদিন অশান্তির অভিযোগ উঠছে। তাঁর ঝামেলা শওকত মোল্লা অনুগামীদের সঙ্গে। নিজের দফতরে ঢোকা নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান পদাধিকারদের সঙ্গে অশান্তি হয়েছিল। তৃণমূল প্রতিষ্ঠা দিবসে ভাঙড়ের হাতিশালায় অশান্তি করার অভিযোগ ওঠে আরাবুলের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে দল অসন্তুষ্ট ছিল। এই সব কাজের জন্য আরাবুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ২০১২ সালে ভাঙড় কলেজে ঢুকে অধ্যাপিকাকে জলের জগ ছুড়ে মারার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই সময় তিনি কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি ছিলেন ! এই আরাবুলকেই একসময় ‘তাজা নেতা’ আখ্য়া দিয়েছিলেন মদন মিত্র ! ২০১৪ সালে আরাবুলকে ৬ বছরের জন্য় বহিষ্কার করেছিল তৃণমূল। কিন্তু, দেড় বছরের মধ্য়েই তাঁকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে আরাবুল ও শান্তনু সেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছিল। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে এই দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়ে আরাবুল ইসলাম এবং শান্তনু সেনকে দল থেকে সাসপেন্ড করেছে।”
আর জি কর মেডিক্য়ালে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর, কার্যত মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সরকারের উল্টো সুরে বিস্ফোরক মন্তব্য় করেছিলেন শান্তনু সেন। তারপর তাঁকে তৃণমূলের মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। শান্তনু সেনের নিরাপত্তাও তুলে নেয় রাজ্য সরকার। তার পরেও আরও ডানা ছাঁটা হয় তাঁর। সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে অপসারিত করা হয় শান্তনু সেনকে। NRS মেডিক্যালের রোগীকল্যাণ সমিতির সভাপতি পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। যদিও সম্প্রতি ফের আইএমএ বাংলা শাখার রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হন শান্তনু সেন।
ভোটে জিতে সপ্তম বার, ইন্ডিয়ান মেডিক্য়াল অ্য়াসোসিয়েশনের পশ্চিমবঙ্গ শাখার রাজ্য সম্পাদক হন চিকিৎসক নেতা। আর জি করকাণ্ডে মুখ খোলায় তৃণমূলের অন্দরে কোণঠাসা হয়ে একের পর এক পদ হারালেও, তখনকার মতো স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিলেন তিনি। ফের একবার দলের রোষে পড়তে হল তাঁকে। যদিও উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিনকয়েক আগে ডায়মন্ড হারবার ডাক্তারদের নিয়ে যে সম্মেলন করেছিলেন, সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন এই চিকিৎসক নেতা। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। অবশ্য শান্তনু সেনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। এরপর এদিন দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে দলবিরোধী বিভিন্ন কাজের অভিযোগে তাঁকে সাসপেন্ড করে।