সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
বছর ঘুরলেই বাংলায় ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। এবারে পাক্কা এক বছর বাকি থাকতে থাকতেই সাংগঠনিক প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি তৃণমূলের মেগা সাংগঠনিক বৈঠক হতে চলেছে নেতাজি ইন্ডোরে। বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী নির্বাচনকে লক্ষ্য করেই সুর বাঁধা হবে এই বৈঠকে, এমনটাই জানা গিয়েছে।
এর আগে, রবিবার কালীঘাটে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আলোচনায় মূলত সাংগঠনিক সমন্বয় বাড়ানো এবং আগামী লড়াইয়ের রূপরেখা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
মহা রদবদলের সম্ভাবনা
তৃণমূলের সর্বস্তরের সাংগঠনিক পদে যে বড় মাপের রদবদল হতে চলেছে তা ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই বারে বারে প্রকাশ্যে জানিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তৃণমূলের সেই সাংগঠনিক রদবদল থমকে রয়েছে এখনো। এই মুহূর্তে ৩ লক্ষ ৯০ হাজার দলীয় পদাধিকারী রয়েছেন। ৬০ হাজারের বেশি জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। আগামী বছরই নির্বাচন। তাই আর সময় নষ্ট না করে একেবারে গ্রাম পঞ্চায়েতের বুথ স্তর পর্যন্ত সংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য সংগঠনের রদবদল করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। গত নভেম্বরে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে মমতা ঘোষণা করেছিলেন যে, দলের সমস্ত স্তরের নেতাদের নিয়ে তিনি আলোচনা করবেন। বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের কারণে সেই বৈঠক কিছুটা পিছিয়ে যায়। অবশেষে ২৭ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার এই গুরুত্বপূর্ণ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ২৯৪ আসনের মধ্যে ২৫০টি আসন নিশ্চিত করার লক্ষ্য স্থির করেছে। রাজ্যের উন্নয়ন, সুশাসন এবং সামাজিক কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে প্রচারের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হবে। নারীকল্যাণ, সমাজমুখী প্রকল্প এবং গ্রামোন্নয়নকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে বেশ কিছু রদবদল ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ও অধ্যাপক সংগঠনে বদল আনা হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, কিছু পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান পদেও পরিবর্তন আসতে পারে। দলের একাংশের মতে, মার্চের প্রথম সপ্তাহেই সাংগঠনিক রদবদল সম্পন্ন করা হতে পারে। সেই সিদ্ধান্তই বৈঠকে গৃহীত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
২৭ ফেব্রুয়ারির বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের জনপ্রতিনিধিদের আগামী লড়াইয়ের দিশা দেখাবেন। সাধারণ মানুষের কাছে তৃণমূল সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলিকে আরও বেশি করে তুলে ধরার নির্দেশ দিতে পারেন তিনি। পাশাপাশি, সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হবে। গত এক দশকে রাজ্য সরকার ৯৪টি সামাজিক কল্যাণমূলক প্রকল্প রূপায়ণ করেছে, যা জাতীয় স্তরে রেকর্ড গড়েছে। এবারের নির্বাচনী প্রচারে নাগরিক পরিষেবা, মহিলা সুরক্ষা এবং গ্রামীণ উন্নয়নের মতো বিষয়গুলি বিশেষভাবে উঠে আসবে।