শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
কলকাতা হাইকোর্টে ফের মুখ পুড়ল রাজ্যের। আবারও প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা। হাইকোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পরও না কোনও পদক্ষেপ করা হয়েছে, না কাউকে ধরা সম্ভব হয়েছে। ২০২৩ সালে দেওয়া নির্দেশ কার্যকর না হওয়ায় বিরক্ত হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। ব্যাঙ্কের একটি ‘লোন রিকভারি’ সংক্রান্ত মামলায় শুক্রবার বিচারপতি বলেন, পুলিশ না পারলে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো হবে।
রানিগঞ্জে ব্যাঙ্কের করা একটি অভিযোগের ভিত্তিতে এই মামলা হয়। অভিযোগ ছিল, ব্যাঙ্ক থেকে এক ব্যক্তি লোন নিয়ে জেসিবি কিনতে চেয়েছিলেন। দেখা যায়, লোন নেওয়ার পর আর ওই লোন মেটানো হয়নি। টাকা না পাওয়ায় ব্যাঙ্ক ওই জেসিবি মেশিন বাজেয়াপ্ত করতে গিয়ে দেখে, আদৌ কোনও মেশিনই কেনা হয়নি। এরপরই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ওই ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্কের অভিযোগ, রানিগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
এরপর ২০২৩-এ হাইকোর্ট রানিগঞ্জ থানার পুলিশকে নির্দেশ দেয়, পুলিশকে পদক্ষেপ করতে হবে। সেই নির্দেশ কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ। শুক্রবার তাই কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করলেন বিচারপতি ঘোষ। আদালত এদিন জানতে চায় জেসিবি কোথায়? কেন অভিযুক্তকে পাওয়া যাচ্ছে না? কে সেই প্রভাবশালী? কত বড় শক্তিমান তিনি? পুলিশকে ভর্ৎসনা করে বিচারপতি বলেন, “ভুলে যাচ্ছেন এটা হাইকোর্টের অর্ডার। এবার সেন্ট্রাল এজেন্সিকে দায়িত্ব দেব। ভুলে যাবেন না, তদন্তকারী অফিসারের কিন্তু নিউ টাউন থানার আইসি-র মতো অবস্থা হবে।”
পুলিশ ও রাজ্যের ভূমিকায় বিরক্তি প্রকাশ করে বিচারপতি ঘোষ বলেন, “রাজ্য যদি মনে করে হাইকোর্টের নির্দেশ মানবে না, তাহলে কোর্ট জানে কী করে নির্দেশ পালন করাতে হয়। হয় ডিভিশন বেঞ্চে গিয়ে এই অর্ডার খারিজ করান, আর না হলে নির্দেশ কার্যকর করুন। আপনারা যদি কোর্টের অর্ডার না মানেন, তাহলে কোর্ট আপনাদের সমস্যা দেখবে না।”
প্রয়োজনে সিআরপিএফ নামিয়ে অর্ডার কার্যকর করা হবে বলে কার্যত সতর্ক করেছেন বিচারপতি। আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এটাই শেষ সুযোগ বলে উল্লেখ করেছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।