শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
ফের বেনজির বিক্ষোভের সাক্ষী থাকল রাজ্য বিধানসভা। দোলের দিন গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা বীরভূমের সাঁইথিয়ায়। রেহাই পান নি হিন্দুরা, এমনই অভিযোগ তুলে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে সরকার পক্ষের বিবৃতির দাবিতে সরব হল প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিধায়করা। যদিও সরকারপক্ষের তরফে বিজেপি বিধায়কদের এই দাবি না মানায় ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা।
দোলের দিন আবির খেলাকে কেন্দ্র করে সাঁইথিয়ায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনায় সরকার পক্ষের বিবৃতির দাবি করেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। শাসকের নেতৃত্বে রাজ্যের হিন্দুদের ওপর চলছে লাগাতার হামলার ঘটনা। অভিযোগ করে বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনতে চান বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বীরভূমের সাইঁথিয়াতে কেন ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে, এ বিষয়ে সভায় সরকারের বিবৃতি দাবি করেন তিনি। যদিও তা খারিজ করে দেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, “ইতিমধ্যেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর বিধানসভায় দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিবৃতি দিয়েছেন। সুতরাং পুনরায় এনিয়ে আলোচনার প্রয়োজন নেই।” এরপরই বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়করা।
বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, গত ১৩ বারের মত মুখ্যমন্ত্রী ও সরকার তাদের দায়বদ্ধতা মানতে রাজি নয়, একাধিক বিধায়ক সাসপেন্ড। আজকেও আমাদের বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ সাঁইথিয়া কান্ডে সরকার পক্ষের বিবৃতির দাবি করেন। আমি হলে মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির দাবি জানাতাম। তা এদিন খারিজ করে দেন অধ্যক্ষ। বিধানসভায় জবাব নয় তো কোথায় জবাব দেবেন?
শুভেন্দু আরও বলেন, “এই সরকার তার দায়বদ্ধতা পালন করছে না। বিধানসভাকে প্রহসনে পরিণত করেছে। সে কারণেই বিধানসভার ভেতরে ও বাইরে সমানে প্রতিবাদ দেখাতে বাধ্য হচ্ছে বিজেপি। স্পিকার এখানে এক চোখ বন্ধ করে থাকেন। ওনার ডান দিকটা খোলা, বাঁ দিকটা বন্ধ। এদের কাছে কোনও উত্তর নেই। তাই বিজেপির প্রস্তাব নিয়ে বিধানসভায় কোনও আলোচনা হয় না।” পাশাপাশি অন্যান্য একাধিক রাজ্যের প্রসঙ্গ তুলে কেন লাইভস্ট্রিমিং নয় প্রশ্ন শুভেন্দুর। ভবিষ্যতে আরও বড় বিক্ষোভ চালিয়ে ডাক দেন বিরোধী দলনেতা। এই মুহূর্তে পরিস্থিতি সম্পুর্ণ নিয়ন্ত্রণে।
বিধানসভার বাইরে বিজেপির বিক্ষোভে সামিল হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বিধানসভাকে প্রহসনে পরিণত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ভিতরে ক্যামেরা নিষিদ্ধ, তাই প্রতিদিনই বাইরে এসে আমাদের জনগণের কথা বলতে হচ্ছে। শঙ্কর ঘোষ সরকারের বিবৃতি চেয়েছে। আমি থাকলে পুলিশমন্ত্রীর বিবৃতি চাইতাম। পশ্চিমবঙ্গের একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বন্ধ ইন্টারনেট, ১৪৪ ধারা জারি, কেন? কাকে জবাবদিহি করবেন? পশ্চিমবঙ্গে করবেন না তো কোথায় করবেন? পুদুচেরিতে বিধানসভার লাইভ স্ট্রিমিং হয়, মণিপুরে হয়, এখানে হয় না। বিধায়করা বিধানসভায় কী বলছেন তা জানা যায় না।”
বিধায়কদের পাশে নিয়ে শুভেন্দু আরও বলেন, “এসসি কমিউনিটির লোকেরা আমাদের ভরসা করে। এসসিদের ভোটে নন্দীগ্রামে জিতেছি। আমরা দায়বদ্ধ। পাঁচটা গ্রামকে সাসপেন্ড করে রেখে দিয়েছেন। ১৬৩ ধারা জারি করেছেন। আমরা বলব না? কোথায় জানতে চাইব আমরা? লাইভ স্ট্রিমিং করেন না। কোথায় কী বলছি, কেন বলছি, কেউ জানতে পারছেন না।”