শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“চাকরিহারাদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে। টাকা আদায় করা হোক তৃণমূলের কাছ থেকেও, কারণ টাকা গিয়েছে তৃণমূলের কাছেই।” এমন বিস্ফোরক দাবি করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল সম্পূর্ণ বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করতে না পারায় নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হয়েছে। ফলে, যাদের চাকরি গিয়েছে, তাদের নতুন করে পরীক্ষা দিতে হবে। আজ সেই সকল বিষয় নিয়েই সাংবাদিক বৈঠক সারলেন সুকান্ত মজুমদার এবং সম্বিত পাত্র।
বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার ও সম্বিত পাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন যোগ্যদের পাশে দাঁড়াতে হবে রাজ্য সরকারকে। গতকাল ঠিক যে কথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, আজ সেই একই কথা শোনা গেল সুকান্ত মজুমদারের গলায়। এদিন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “চাকরিহারাদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে। টাকা আদায় করা হোক তৃণমূলের কাছ থেকেও, কারণ টাকা গিয়েছে তৃণমূলের কাছেই। ক্যাবিনেট যদি সিদ্ধান্ত নেয় চোরদের বাঁচাতে হবে, তাহলে ওই ক্যাবিনেটের যিনি মাথা, যাঁর অনুপ্রেরণায় সব হয়, তিনি সহ গোটা ক্যাবিনেটের উচিত জেলে থাকা। যোগ্যদের বাঁচানোর জন্য আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করুন। প্রয়োজনে আবার সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া যায় কিনা তাও দেখতে হবে।”
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী চাইলে এই শিক্ষকদের চাকরি রক্ষা করতে পারতেন। সবাই তো টাকা দিয়ে চাকরি পাননি! আমরা চাই ২৫ হাজারের মধ্যে যে ২০ হাজার যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন, তাঁদের কথা ভাবুক মুখ্যমন্ত্রী।গতকাল দেখলাম, শিক্ষকরা কাঁদছেন। তাদের পরিবার, বাবা-মায়ের চিকিৎসা, সংসার চালানোর চিন্তায় দিশেহারা। বাংলায় শিক্ষকদের বরাবর শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয়, অথচ আজ তারা অসহায়। আর এর জন্যে যে ক্যাবিনেট, ক্যাবিনেট তৈরির মূল কাণ্ডারি যিনি, তাঁদের কারোর বাইরে থাকার অধিকার নেই। তাঁদের সবাইকে জেলে যেতে হবে।”
একই সাথে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, তিন মাস পর নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে। তবে, শিক্ষকরা এতদিন শিক্ষাদান থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। এই যুক্তিতে এসএসসি নিয়মে পরিবর্তন আনার দাবি জানিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “যারা ২০১৬ সাল থেকে পড়াচ্ছেন, তারা কলেজ স্তরের বিষয় পড়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন, কিন্তু স্কুল স্তরে পড়ান। এতদিন তারা শিক্ষাদানের বাইরে ছিলেন। তাই এসএসসি নিয়োগে প্রতি বছরের জন্য কিছু নম্বর সংযোজন করা হোক। এত বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা স্বরূপ তাঁদের কিছু গ্রেস মার্কস দিক এসএসসি। অন্তত এই দিকটা দেখুক সরকার।”
অন্যদিকে, এই ঘটনার বিরুদ্ধেই সরব হয়ে শুক্রবার দিল্লিতে বঙ্গ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ বেশ কয়েকজন সাংসদ। তখনই বঙ্গভবনের সামনে থেকে সুকান্ত-সহ বিজেপির বেশ কয়েকজন সাংসদকে আটক করে পুলিশ।