সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
AIIMS-এর মতো একটা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করার মত পরিকাঠামো নেই? এইমস এখানে গড়ে তোলা হয়েছে, আর মানুষ চিকিৎসার জন্য ভেলোর যাবে? তাহলে হাসপাতাল করে কী লাভ? এভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণাধীন কল্যাণী এইমস হাসপাতালের শোচনীয় পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ কল্যাণী এমস হাসপাতালের নড়বড়ে পরিকাঠামো নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে রীতিমতো ভর্ৎসনার সুরে বলেন, “অপারেশন থিয়েটার আছে? কটা অপারেশন হয়েছে?” (All India Institute of Medical Sciences, (AIIMS) Kalyani)
প্রসঙ্গত জয়নগরে এক নাবালিকা ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠার পরে নিজে থেকেই কিছুটা নজিরবিহীন ভাবে কল্যাণী এইমসের ডাক্তারদের দিয়ে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। কিন্তু ময়নাতদন্তের জন্য রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা সত্ত্বেও সেখানে ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই বলে আজ রিপোর্ট জমা পড়ে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে। তারপরেই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এইমস হাসপাতালে পরিকাঠামো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করার জন্য নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিবকে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিবের উদ্দেশে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, অবিলম্বে কল্যাণী এইমসের পরিকাঠামোগত কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিবকে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোন অনুমোদনের প্রয়োজন হয় রাজ্য সেটা দিয়ে সাহায্য করবে। কিন্তু যে কোন মূল্যে 2025 সালের 31 ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। (All India Institute of Medical Sciences, (AIIMS) Kalyani)
এরপরেই কল্যাণী এইমস হাসপাতাল সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন হওয়া সত্ত্বেও সেখানে ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই কেন সেই প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “গত ৫ বছর ধরে এখানে ছাত্ররা পড়াশোনা করছে। এখান থেকেই তারা এমবিবিএস পাস করে ডাক্তার হয়ে বেরোবে ময়নাতদন্তের ন্যূনতম অভিজ্ঞতা ছাড়াই। অদ্ভুত ব্যাপার তো! দিল্লির মতো না হোক অন্তত ঋষিকেশ এইমসের মতো পরিকাঠামো তৈরি হোক। একজন নাগরিক কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন হাসপাতালের সাহায্য চেয়ে আদালতে এসেছিল। আদালত নির্দেশও দিয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে কেন্দ্রীয় সরকারী হাসপাতালকে সাহায্য নিতে হচ্ছে কল্যাণী যে এন এম হাসপাতালের মত একটা প্রান্তিক সরকারী হাসপাতালের! এরপরে সাধারণ মানুষ কি সুরাহা পাবে?”