সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
নিরীহ পর্যটকদের রক্তে রক্তাক্ত ভূস্বর্গ। জঙ্গি হামলার জেরে থমথমে গোটা কাশ্মীর। আর সেই আবহেই হামলাকারী জঙ্গিদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য় সামনে এল। জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ে যে জঙ্গিরা হামলা চালায়, সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান থেকেই ভারতে প্রবেশ করে তারা। শুধু তাই নয়, জঙ্গিদের মধ্য়ে কাশ্মীর থেকে পাকিস্তান যাওয়া দুই যুবকও থাকতে পারে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের।
মঙ্গলবার কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ পর্যটককে খুন করে জঙ্গিরা। মোট ছ’জন সশস্ত্র জঙ্গি নিরীহ পর্যটকদের উপর চড়াও হয়ে বলে জানা যাচ্ছে। ওই ছ’জনের মধ্যে দু’জন কাশ্মীরেরই বাসিন্দা বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। এর মধ্যে আদিল ঠোকর ওরফে আদিল গুরিকে হামলার মূলচক্রী হিসেবে শনাক্ত করা গিয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আদিল আসলে কাশ্মীরেরই অনন্তনাগের গুরি গ্রামের বাসিন্দা। আর এক জঙ্গি আহসান দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা। ২০১৮ সালে তারা পাকিস্তান চলে দিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। (Pahalgam Terror Attack)
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে ওয়াঘা সীমান্ত হয়ে পাকিস্তান চলে যায় আদিল। গত বছর ফের কাশ্মীরে দেখা যায় তাকে। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের তরফে ইতিমধ্যেই জঙ্গিদের ছবি এবং স্কেচ প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দাড়িওয়ালা যুবকই আদিল বলে জানা যাচ্ছে। হামলার পর পর সে পাকিস্তানে ফিরে গিয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের।
পাশাপাশি, পাকিস্তানি জঙ্গি মুসার স্কেচও প্রকাশ করেছেন গোয়েন্দারা। ২০২৪ সালের ২৫ অক্টোবর গুলমার্গে সেনার কনভয় লক্ষ্য করে যে হামলা হয়, মুসা তাতে যুক্ত ছিল বলে জানা যাচ্ছে। সেবার চার সাধারণ মানুষ এবং দুই জওয়ানের মৃত্য়ু হয়। আর এক জঙ্গিকে আসিফ শেখ শনাক্ত করা গিয়েছে। সে কাশ্মীরের অবন্তীপুরার বাসিন্দা। জানা যাচ্ছে, হামলায় সে গাউডের ভূমিকা পালন করেছে। জঙ্গিদের পথ দেখিয়ে আনে সে-ই। এই হামলায় পাকিস্তানের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার সংযোগ উঠে আসছে। তাদের ছায়া সংগঠন The Resistant Front হামলার দায় স্বীকার করেছে।
শীর্ষস্তরের এক সরকারি আধিকারিককে উদ্ধৃত করে বিষয়টি সামনে এনেছে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম The Hindu। ওই আধিকারিকের বক্তব্য, “তিন-চারজন পাকিস্তানিকে নিয়ে ওই দুই যুবক সীমান্ত পেরিয়ে সম্প্রতি কাশ্মীরে ঢোকে। ওদের গতিবিধি সম্পর্কে বিশদ তথ্য ছিল আমাদের কাছে।”

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জংলি পোশাক পড়ে চড়াও হয় জঙ্গিরা। তাদের হাতে AK সিরিজের আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। মাথায় হেলমেট পরেছিল তারা, যাতে বসানো ছিল ক্যামেরা। হামলার ভিডিও সরাসরি মূলচক্রীরা দেখতে পাচ্ছিল।