সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
চাকরি হারা অশিক্ষক কর্মীদের মাসিক ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গ্রুপ সি কর্মীদের জন্য ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসে ২০ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়ার কথা জানালেন প্রশাসনিক প্রধান। যদিও এই ঘোষণায় গ্রুপ ডি অশিক্ষক কর্মীরা মোটেই খুশি নন।
তাঁদের দাবি, এই টাকা লোন মেটাতেই চলে যাবে। ফলে আরও পাঁচ হাজার টাকা বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকার চাকরি গিয়েছে। গোটা প্যানেল বাতিল হওয়াতে তালিকায় আছেন বহু অশক্ষিক কর্মীও। রাজ্যের তরফে আবেদনে ইতিমধ্যে শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালানোর একটা সুযোগ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে।
কিন্তু তবে গ্রুপ-সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের আপাতত কাজ চালিয়ে দেওয়ার অনুমতি দেয়নি কোর্ট। এই অবস্থায় ক্ষোভ তীব্র হয়েছে শিক্ষাকর্মীদের। এরপর নবান্ন সভাঘরে একটি বৈঠকের ডাক দেন। সেখানে শিক্ষাকর্মীদের তরফে একাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। ফোনে ওই বৈঠকে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের বিষয়টি নিয়ে খুব শীঘ্রই রিভিউ পিটিশনে যাবে রাজ্য। একই ভাবে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মচারীদের জন্যেও রিভিউ পিটিশন করা হবে। তবে কারা যোগ্য এবং অযোগ্য সে বিষয়ে এদিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে এই সংক্রান্ত মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাকর্মীদের মাসিক ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করেন। মানবিকতার দিক থেকেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এজন্য আদালতের প্রশ্নের মুখেও পড়ার সম্ভাবনা আছে বলে আশঙ্কা তাঁর। কিন্তু সবদিক ভেবেই এই ভাতা বলে দাবি প্রশাসনিক প্রধানের।
এইও প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে শিক্ষা দফতরকে রাখা হচ্ছে না। শ্রম দফতর, আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত। এই ঘোষণা করতে গিয়ে বন্ধ ডানলপের কর্মীদের কথা বলেন। জানান, সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। মানবিকতার কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এহেন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম।

তাঁর কথা, এমন ভাবে টাকা দেওয়া যায় না। আদালত অবমাননার কথাও বলেন। আইনজীবীর কথায়, আগে সরকারকে অযোগ্যদের থেকে টাকা ফেরত নিতে হবে। আর তা না করে আবার টাকা দিলে সমস্যার আরও বাড়বে অর্থাৎ আইনি জটিলতায় জড়িয়ে যাবেন বলে কার্যত রাজ্য প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি ফিরদৌস শামিমের।