কনিষ্ক সামন্ত। কলকাতা সারাদিন।
৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন। ২৯ এপ্রিল রয়েছে মহাযজ্ঞ। ভিড় সামলাতে নবান্নে প্রস্তুতি বৈঠক থেকে আগেভাগেই সবাইকে চলে যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৬ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত স্পেশাল ট্রেনেরও ব্যবস্থা করেছিল দক্ষিণ পূর্ব রেল।
০৮১১৩ ও ০৮১১৪ হাওড়া-দীঘা-হাওড়া স্পেশাল ট্রেন দুপুর ১টা ১০ মিনিটে হাওড়া থেকে ছেড়ে বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে দিঘায় ঢোকার কথা। আবার দিঘা থেকে বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে হাওড়ায় ঢোকার কথা। অন্যদিকে ০৮১১৫/০৮১১৬ পাঁশকুড়া-দীঘা-পাঁশকুড়া স্পেশাল ট্রেন ভোর ৪টে ৪৫ মিনিটে পাঁশকুড়া থেকে ছেড়ে সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে দিঘায় পৌঁছনোর কথা। আবার ৭টা ৩৫ মিনিটে দিঘা থেকে ছেড়ে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে পাঁশকুড়ায় ফিরে আসার কথা ছিল। পথিমধ্যে সব স্টেশনেই দাঁড়ানোর কথা দুটি ট্রেনেরই।
যদিও রবিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, স্পেশাল ট্রেনগুলি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আর এনিয়েই রাজনৈতিক তরজা তৃণমূল বিজেপির।
দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের আগে ট্রেন বাতিলকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। আগামী ৩০ এপ্রিল, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথ ধামের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ২৬ এপ্রিল থেকে আগামী ৪ মে পর্যন্ত হাওড়া দিঘা স্পেশ্যাল এবং পাঁশকুড়া দিঘা স্পেশ্যাল- এই দুটি ইএমইউ ট্রেনে বগির অভাব এবং অপারেশনাল সমস্যার কারণে বন্ধ রাখা হচ্ছে।
তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেছে। তারা মনে করছে ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করা হয়েছে। এভাবে মানুষকে আটকানো যাবে না।রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই কাজ করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত ছোট মানসিকতার পরিচয়। সেদিন ইতিহাস সৃষ্টি হবে। কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি চক্রান্ত করে মানুষকে আটকাতে পারবে না।”

তৃণমূলের পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক ফেসবুকে লেখেন, আগামী ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথদেবের মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের আশীর্বাদ নিতে এবং দর্শনের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ তীর্থযাত্রীরা। পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে হিন্দুদের এই ঐক্য এবং ভক্তি দেখে ঈর্ষান্বিত হয়েছে কেন্দ্রের স্বৈরাচারী বিজেপি সরকার। ২৬ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত যে বিশেষ হাওড়া-দিঘা এবং পাঁশকুড়া-দিঘা ইএমইউ ট্রেন চালানোর জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল, মিথ্যা কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃক তাৎক্ষণিকভাবে তা বাতিল করা হয়েছে। বাংলার হিন্দুদের প্রতি এমন বিমাতৃসুলভ আচরণ এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উত্তর মানুষ ঠিকই দেবেন আগামীতে।

বিজেপি নেতা ওম প্রকাশ সিং বলেন, “রেল কর্তৃপক্ষ তাদের কাজ করেছে ভাল বুঝে।জগন্নাথ মন্দির নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। এতে কিছু লাভ হবে না।”