সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে একটাই ধ্বনি শোনা গিয়েছিল, “উই ওয়ান্ট জাস্টিস।” রবিবার সরস্বতী পুজোর দিন দক্ষিণ কলকাতার যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ল কলেজেও একই স্লোগান শোনা গেল। এই কলেজে সরস্বতী পুজো বন্ধ করার জন্য ধর্ষণ-খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কাঠগড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মহম্মদ সাব্বির আলি।
এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশের পাহারায় এই কলেজে পুজো হচ্ছে। কিন্তু পুলিশের সামনেই বহিরাগতদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন ছাত্রীরা। এই অভিযোগ ঘিরে রবিবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল কলেজ। পড়ুয়াদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাব্বির। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই পুলিসকে নির্দেশ দিয়েছিলেন গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে রিপোর্টও তলব করেছিলেন তিনি। অভিযোগ তারপরও কাটেনি জট।
আজ কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ডে কলেজে ও যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী কলেজে বাগ্দেবীর পুজোর আরাধনা শুরু হয়। আজ দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ঘটনাস্থল পরিদর্শন যান। সেইসঙ্গে যান দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায়। তাঁরা কলেজে ঢুকতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়ারা। ছাত্রীদের পাশাপাশি বিক্ষোভে সামিল হন ছাত্ররাও। তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে দাবি জানান। পড়ুয়াদের মধ্যে চারজনের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর আলোচনা হয়। এরপর কলেজ ছাড়েন শিক্ষামন্ত্রী। বিক্ষোভের মধ্যেই কলেজ ছাড়েন সাংসদ। তিনি অবশ্য পড়ুয়াদের গুরুতর অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে চাননি। মালা বলেন, “পুজোর দিনে বিচার চাই স্লোগান শুনব না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবরকম পুজো, উৎসবে উৎসাহ দেন। সেই মতো সব ছাত্র-ছাত্রী পুজোয় শামিল হবেন, এটাই চাইব। রবিবার অভিযোগ জানাল। আমি কথা বলে নেব। আমরা চাইব না পড়ুয়ারা রাজনীতিতে জড়াক।”
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ।
একই কলেজে তিন জায়গায় পুজো
রবিবার যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ল কলেজে তিন জায়গায় সরস্বতী পুজো হয়। কলেজের মধ্যে পুলিশের পাহারায় পুজো করেন আইন বিভাগের পড়ুয়ারা। একটি চেয়ারের উপর সরস্বতী প্রতিমা রেখে মেঝেতে বসে পুজো করেন অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায়। কলেজের বাইরে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় দফতরের বাইরে পুজোর আয়োজন করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।