সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
তারিখ পে তারিখ। তারিখ পে তারিখ। মঙ্গলবারের পর বুধবারও সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গিয়েছিল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মামলার শুনানি। যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের। কিন্তু বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে নির্ধারিত সময়ই আরজি কর মামলার শুনানি হয়। তবে মাত্র আধ ঘন্টায় শেষ হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি।
এদিন দুপুর ২টো নাগাদ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আরজি কর মামলার শুনানি হয়। আরজি কর মামলা শুনছে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়াল, বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ। এদিন শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি সিবিআই থেকে আরজি করের তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট দেখতে চান।
স্টেটাস রিপোর্ট পড়েই তিনি সিবিআইকে তদন্ত চালিয়ে যেতে নির্দেশ দেন। চার সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে এদিন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন আসল দোষীর শাস্তি চায় রাজ্য। ইতিমধ্যেই চার্জ গঠন করা হয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে বলেও জানিয়েছে রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে আরজি কর হত্যাকাণ্ডে ও হাসপাতালের আর্থিক তছরুপের মামলা যেভাবে সিবিআই তদন্ত করেছে সেইভাবেই তদন্ত করবে। চার সপ্তাহের মধ্যেই পরবর্তী রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে জনা গিতে হবে। যদিও আরজি কর মামলার পরের শুনানিতে আর থাকবেন না প্রধানবিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। ১০ নভেম্বর তিনি অবসর গ্রহণ করবেন।
শুনানি চলার সময় একজন কৌঁসুলি পশ্চিমবঙ্গ থেকে মামলা অন্য রাজ্যে স্থানান্তরণের আর্জি পেশ করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে যে ‘বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি’ চলছে তার প্রেক্ষিতে রাজ্যে চলা আর জি কর মামলা রাজ্যের বাইরে পাঠানো উচিত। তাঁর আর্জির জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মণিপুরের ক্ষেত্রে আমরা রাজ্যের বাইরে মামলা পাঠাতে বলেছি। কিন্তু এখানে আমরা সে রকম কিছু করব না। এ ধরনের বদলি হবে না।’
একজন কৌঁসুলি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের জনগণ রাজ্যের বিচারব্যবস্থা ও পুলিশের উপর আস্থা হারিয়েছেন’। প্রধান বিচারপতি তাঁকে ধমকে বলেন, ‘জনগণের কথা বলবেন না…আপনারা কাদের হয়ে হয়ে মামলা লড়ছেন? এ রকম সাধারণ বিবৃতি দেবেন না। আদালতেও ক্যান্টিনের খোশগল্প চলছে!’ আর-একজন কৌঁসুলি বলেন, সিবিআই যথাযথ তদন্ত করেনি। রাজ্য পুলিশ তদন্ত করে যা পেয়েছে তাকেই অনুমোদন করেছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, নিম্ন আদালতের বিচারপতির ক্ষমতা আছে আরও তদন্ত চালানোর আদেশ দেওয়ার। সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করবে না।
সেখানেই ন্যাশানাল টাস্কফোর্স নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অন্যদিকে এদিন অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দিয়েছে ন্যাশানাল টাস্ক ফোর্ট। এই রিপোর্ট সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মখ্যসচিব ওই রিপোর্ট দেখে কোনও পরামর্শ দিতে চাইলে তা দিতে পারেন বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে টাস্ক ফোর্স প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিরা টাস্ক ফোর্সে না থাকজে জাতীয় টাস্ক ফোর্স তৈরির উদ্দেশ্য পুরাণ হবে না।’ সুপ্রিম কোর্ট এদিন জানিয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে রিপোর্ট জমা পড়েছে। কিন্তু এদিন বেঞ্চ অন্য মামলা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। তাই পরবর্তী শুনানিতে এই বিষয়ে আদালত পর্যবেক্ষণ করবে।