কলকাতা সারাদিন।
বিজেপি বিরোধী আন্দোলনে দেশের প্রধান মুখ মমতা, হাওড়ায় মন্তব্য ঋতব্রত’র। শ্রম কোড বাতিলের ডাক। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতি, বাংলার প্রতি বঞ্চনা, রেল হকারদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে এবং শ্রম কোড বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে হাওড়া সদর আইএনটিটিইউসি’র উদ্যোগে হাওড়া স্টেশন চত্বরে এক জনসভার ডাক দেওয়া হয়।
ওই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, হাওড়া জেলা (সদর) তৃণমূলের সভাপতি ও বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ, বিধায়ক নন্দিতা চৌধুরি, হাওড়া সদর আইএনটিটিইউসির সভাপতি অরবিন্দ দাস সহ দলের আরও অনেকে।
ওই জনসভায় এদিন আইএনটিটিইউসি’র রাজ্য সভাপতি সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রের অধিনস্ত সংস্থা ব্রিজ অ্যান্ড রুফকে বিলগ্নিকরণ করতে কেন্দ্রীয় সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তুলছি। বিষয়টি সংসদেও তুলব। লাভজনক কেন্দ্রীয় সংস্থাও বিক্রি করে দিতে চাইছে কেন্দ্র। ব্রিজ অ্যান্ড রুফকে বিলগ্নিকরণের বিরুদ্ধে আমরা আমাদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লড়াই চালাব।”
এদিন ব্রিজ অ্যান্ড রুফের যে ৮০ জন শ্রমিক আমাদের সংগঠনে যোগ দিলেন তাঁরা বুঝেছেন সিটুতে থেকে এই লড়াই করা সম্ভব নয়। বিলগ্নীকরণের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে সামিল হতেই ওঁরা এদিন আইএনটিটিইউসিতে যোগ দিলেন। বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এসে আটকে গিয়েছিল। সারা দেশে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ করে আন্দোলন সংগঠিত করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা প্রকল্পে রাজ্যের অসংগঠিত ক্ষেত্রের ১ কোটি ৭৩ লক্ষ মানুষের নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪১ লক্ষ মানুষ এই প্রকল্পে টাকা পেয়েছেন। এখনও অসংগঠিত ক্ষেত্রে প্রায় ২৭ লাখ শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত হতে বাকি আছে। বিভিন্ন জায়গায় শিবির করে তাঁদের নাম দ্রুত এই প্রকল্পে নথিভুক্ত করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার শ্রম কোড চালু করতে চেয়ে শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে ধিতে চাইছে। এটি চালু হলে শ্রমিকরা ক্রীতদাসে পরিণত হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন বাংলায় এই শ্রম কোড চালু হবে না। আমরা কোনওভাবেই এই শ্রমকোড চালু হতে দেব না।
এদিন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেবার কোড চালু করার বিরোধীতা করায় বেশ কিছু রাজ্য এর বিরোধীতা করেছে। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারকে জানানো হচ্ছে না, ট্রেড ইউনিয়নকে জানানো হচ্ছে না। আগে সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে ২৯টা শ্রম আইন বাতিল করে ৪টা লেবার কোড চালু করেছিল। এখন সারা দেশ জুড়ে এটা চালু করতে গেলে অনুমতি লাগবে। সেটা কোনও অবস্থায় করতে পারছে না। ৮ ঘন্টা কাজ ১২ ঘণ্টা করতে চাইছে। শ্রম কোড চালু হলে ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার চলে যাবে। কোনও অবস্থায় শ্রম কোড চালু করতে দেওয়া যাবে না। ঐক্যবদ্ধ লড়াই চলবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আন্দোলনের প্রথম নেতৃত্ব দিয়েছেন। ব্রিজ অ্যান্ড রুফকে নিয়ে সরকার বিলগ্নিকরণ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এই বিষয়টি পার্লামেন্টে তোলা হবে। এই কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত কিছু বেচে দিতে চাইছে। ব্রিজ অ্যান্ড রুফের বিলম্বিকরণ বিরোধী লড়াই আমরা চালাচ্ছি। যারা আইএনটিটিইউসিতে যোগদান করেছেন তারা বুঝতে পেরেছেন সিআইটিইউতে থেকে লড়াই করা যাবে না। এই লড়াই মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বেই হবে।
উল্লেখ্য, এদিনের জনসভায় বার্জার পেন্টস ও ব্রিজ অ্যান্ড রুফ কারখানার প্রায় ১০০ জন শ্রমিক সিটু থেকে আইএনটিটিইউসিতে যোগ দেন। তাঁদের হাতে সংগঠনের পতাকা তুলে দেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।