শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। মোদীজি কথা দিয়েছিলেন, কথা রেখেছেন। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত, গর্বিত। আজ উৎসব পালন করা উচিত।” এভাবেই আজ অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের জমিতে জঙ্গি ঘাঁটিগুলি মোদীর সরকারের এয়ার স্ট্রাইকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
অপারেশন সিঁদুর’এ পাকিস্তানে একের পর এক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। আর তার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের এই অভিযানের কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার দুপুরে কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, সবার সজাগ ও সতর্ক থাকা উচিত যাতে পাকিস্তান নামক আবর্জনাটি আর কিছু করতে না পারে।
শুভেন্দু বলেন, ”পোশাক সরিয়ে হিন্দু পুরুষদের চিহ্নিত করে স্ত্রী ও সন্তানদের সামনে খুন করা হয়েছে। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এরকম কখনও দেখিনি। রাত জেগে ভারতীয় জওয়ানরা করেছেন তারাই প্রকৃত চৌকিদার। তাদের জন্য ভারতবাসী হিসাবে আমরা গর্বিত। সর্বত্র জাতীয় পতাকা নিয়ে আনন্দ মিছিল করা উচিত। প্রত্যেক ধর্মীয় স্থানে ভারতীয় জওয়ানদের জন্য প্রার্থনা ও পূজা করা উচিত। সবার সজাগ ও সতর্ক থাকা উচিত যাতে পাকিস্তান নামক আবর্জনাটি আর কিছু করতে না পারে। আমার আজ সন্ধ্যায় কলকাতায় রাম মন্দিরে আরতিতে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা আছে।’
এর পরই তৃণমূলকে আক্রমণ শানিয়ে শুভেন্দু বলেন, “তৃণমূল আর বামপন্থীরা কোথায়? কাল তৃণমূল প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১৪টি প্রশ্ন রেখেছিল। আজ কোন গর্তে লুকিয়ে পড়েছে? সবার যখন একজোট হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকা উচিত তখন তারা প্রশ্ন করছে? তার জবাব মাঝরাতে ভারতীয় জওয়ানরা দিয়ে দিয়েছেন। যাদবপুরের টুকড়ে – টুকড়ে গ্যাং থেকে শুরু করে রাজ্যে যেসব দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে আঘাত হানতে হবে পশ্চিমবঙ্গবাসীকে।”
অন্যদিকে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে কোনও মাদ্রাসায় বুথ তৈরি করা যাবে না। একই সঙ্গে যে সব জায়গায় যে সব জায়গায় হিন্দুদের মুসলিম মহল্লার ভিতর দিয়ে বুথে যেতে হয় সেখানে অতিরিক্ত বুথ তৈরি করতে হবে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে এই দাবি জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার বিকেলে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, মোথাবাড়ি, সামসেরগঞ্জ, ধুলিয়ান দেখার পর রাজ্যের হিন্দুরা মুসলিম মহল্লার ওপর দিয়ে ভোট দিতে যেতে নিরাপদ বোধ করছেন না।
এদিন শুভেন্দু বলেন, “কোনও মাদ্রাসাতে ২০২৬-এর নির্বাচনে বুথ করা যাবে না। হিন্দু ভোটাররা সুরক্ষিত নয়। যে সব জায়গায় মাদ্রাসায় বুথ আছে, বদল করতে হবে। ধুলিয়ান, সামসেরগঞ্জ, মোথাবাড়ি দেখার পরে হিন্দু ভোটাররা মুসলিমবহুল এলাকায় অবস্থিত মাদ্রাসাগুলিতে ভোট দিতে যেতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। যে সব মিশ্র এলাকা রয়েছে সেখানে মুসলিম মহল্লার ওপর দিয়ে হিন্দুরা বুথকেন্দ্রে গেলে আক্রান্ত হবেন। ২০২১, ২০২৪ এর নির্বাচনে এই ধরণের ঘটনা ঘটেছে। আমরা মোথাবাড়ি, সামসেরগঞ্জ দেখার পরে হিন্দুদের মুসলিম মহল্লার ওপর দিয়ে যাতে ভোট দিতে যেতে না হয় সেজন্য অতিরিক্ত বুথ তৈরির দাবি করেছি।”

একই সঙ্গে রাজ্যে বেআইনিভাবে বুথ লেভেল অফিসার পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে কমিশনকে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “আইপ্যাকের চিটিংবাজদের কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পেয়ারের এসডিওদের একটা অংশ বুথ লেভেল অফিসার বদলে দিচ্ছে। যা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন ছাড়া করা যায় না। স্থায়ী কর্মচারী ছাড়া কাউকে বিএলও করা যায় না। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা পুরসভার বিএলওদের তালিকা কমিশনকে জমা দিয়েছি। এখানে সহায়িকা ও আশা কর্মীদের বিএলওর দায়িত্ব দিয়েছে। এগুলো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বলেছেন, কমিশনের নির্দেশ ছাড়া বিএলও বদলাতে পারবেন না। আর এগরায় যা হয়েছে সেই অভিযোগ যদি সত্যি হয় তাহলে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বলেছেন, আমি শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে পদক্ষেপ করব।”