শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“হিন্দুদের উপর অত্যাচারের বদলা হবে। বাই বাই করতে হবে হীরক রানিকে।” এভাবেই চড়া সুরে অমিত শাহের মঞ্চ থেকে মমতাকে তীব্র আক্রমণ শানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে অমিত শাহের উপস্থিতিতেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় সরকার গঠনের ডাক দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ‘হিন্দু যদি বাঁচতে চাও..’, বক্তব্যের শুরুতেই স্লোগান তোলেন শুভেন্দু অধিকারী। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্যে অমিত শাহের ভূমিকা নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। বলেন, “বিশ্বের সর্ববৃহৎ নেতা নরেন্দ্র মোদীর বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে অমিত শাহ অপারেশন সিঁদুরের অন্যতম কারিগর। তিনি আমাদের সকলের নেতা, যার হাত ধরে ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর বিপ্লবের মাটি মেদিনীপুরে দলের পতাকা নিয়েছিলাম।”
সাম্প্রতিককালে অমিত শাহের তিনটি অবদানের জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বিরোধী দলনেতা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সেই তিন কাজ কী? শুভেন্দুর কথায়, ”বেশি কথা আমি বলতে চাই না এখানে। শুধু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর তিনটি কাজের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। প্রথমটি হল, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত তিন রাজ্যবাসীর মধ্যে একজন টালিগঞ্জের বিতান অধিকারী। তাঁর স্ত্রী আগেই নাগরিকত্বের আবেদন জানিয়েছিলেন। আমাদের আর্জি মেনে অমিত শাহজি দ্রুত তাঁকে নাগরিকত্ব দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তানে আটকে পড়া বাংলার বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউকে সুস্থ অবস্থায় নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া। আর তৃতীয়ত, বাংলাদেশে আটক কোচবিহারের কৃষক উকিল বর্মনকে একইভাবে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা। সীমান্তে বিএসএফকে সক্রিয় করে তবেই এই কাজ সাফল্যের সঙ্গে করেছেন তিনি। এর জন্য আমরা, বাংলার মানুষ তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।”

এদিনের সাংগঠনিক সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অমিত শাহের সামনেই সুকান্ত বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সভা থেকে আমি বলেছিলাম অপারেশন বাংলা হবে। তাতে মুখ্যমন্ত্রী রাগ করেছিলেন। মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পাকিস্তানের জন্য অপারেশন সিঁদুর আছে, আপনার বিরুদ্ধে অপারেশন বাংলা করবে আমার ভারতীয় জনতা পার্টির হাজার হাজার মণ্ডল স্তরের কার্যকর্তারা। তাঁরাই আপনাকে আপনার চেয়ার থেকে নামাবেন।”

সুকান্তর আরও অভিযোগ, অপারেশন সিঁদুর নিয়ে কুৎসা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। বীরভূমের অনুব্রত মণ্ডল, যিনি তৃণমূলেরই নেতা, তিনি পুলিশের বাড়ির বউ-মায়ের সম্মান রাখতে পারছেন না। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী আপনার লজ্জা লাগে না? যে পুলিশমন্ত্রী নিজের পুলিশের বাড়ির মায়েদের ইজ্জত রাখতে পারেন না, তিনি অপারেশন সিঁদুর নিয়ে কথা বলেন? এরকম মহিলার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসে থাকার অধিকার নেই।”