বিতস্তা সেন। কলকাতা সারাদিন।
রবিবার বিকেলে মহামিছিলে বেরিয়েছিল নাগরিক সমাজ। কোনও বিশেষ দলের ডাকে নয়, সাধারণ মানুষ এতে পা মিলিয়েছিলেন নিজের তাগিদেই। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসেছিলেন এদিন আরজি কর নিয়ে বিচার চাইতে। কেন ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও সিবিআই কোনও ফলাফল সামনে আনতে পারল না, কেন ডাক্তার মেয়েটির রক্তাক্ত দেহ দেখার পরও বাড়ির লোককে বলা হল, মেয়ে আত্মহত্যা করেছে, কেন প্রমাণ নয়ছয় করল শাসক-ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষ, কেন রাজ্য সরকার ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল দোষীদের, তা নিয়ে সকলের মনে হাজারও প্রশ্ন। আর এর সঠিক জবাব খুঁজতেই রাস্তায় নামা।
ধর্মতলার সামনে ধর্না মঞ্চে ছিলেন শোভন গঙ্গোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়রা। সকালে বাড়ি যাওয়ার আগে স্বস্তিকা ফেসবুকে লিখলেন, ‘বাড়ি ফিরছি। আপনারা যারা আজ ঘুমোলেন, কাল জাগবেন। লড়াই চালিয়ে যেতেই হবে। বিচার না আসা পর্যন্ত।’
ধর্না মঞ্চ থেকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন স্বস্তিকা আর সোহিনী দুজনেই। সেখান থেকে টলিউডের নতুন তৈরি ‘সুরক্ষা বন্ধু’ কমিটি ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এই উদ্যোগের ঘোষণা করেন ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। যিনি তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসেবেও পরিচিত।
স্বস্তিকা প্রশ্ন তোলেন, ‘আরজি করের ঘটনার পর কেন অভিনেত্রীদের সুরক্ষার কথা ভাবা হচ্ছে। আগে কেন হয়নি? রাস্তায় আউটডোরে শ্যুটিং করতে গেলে, আমরা তো রাস্তায় হিসু করি। একটা বাথরুম নেই, মহিলাদের বাথরুম করার কোনও জায়গার ব্যবস্থা নেই আমাদের রাজ্যে, আমাদের দেশও নেই। আর এটা শুধু আমাদের (তারকাদের) কথা না, রাস্তা নিয়ে যে মহিলারা যাতায়াত করে, তাদের সবার কথা। কারণ ধাবার বাথরুমগুলো এত নোংরা থাকে যে, ওখানে হিসু করলেই ইউটিআই নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। আর হাসপাতালে ভর্তি হলেই ধর্ষণ হবে। তার চেয়ে বাবা যাদের চিনি বলব এদিক দেখ, ওদিক দেখ, আর আমরা রাস্তার ধারে শালীনতা বজায় রেখেই হিসু করতে বসে যাব। এই কথাগুলো কেন একটা ধর্ষণ হওয়ার পর ভাবছে সরকার। এতদিন ভাবল না। ‘
আর সোহিনী তোপ দাগলেন, ‘কোনও রাজনৈতিক দলের কেউ যদি বলেন যে আমাদের সুরক্ষিত রাখবেন, আমরা মেনে নেব না। আমরা মহিলা অভিনেত্রীরা নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নিজেরাই করে নেব। আর গোটা পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে ঘোষণা করতে গেলে, সেটা সরকারের তরফ থেকে অফিসিয়ালি করতে হবে। ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে আমরা মহিলারা নিয়ম বানিয়ে নেব। শাসকদলের কেউ এসে সেই নিয়মগুলো বানাবে না।’