এখনও জেলবন্দি রয়েছেন ইসকন-এর সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। তাঁর মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশে পথে নেমেছেন হিন্দুরা। সেখানে তাঁদের নাগাড়ে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার কোনও লক্ষণ এখনও দেখা যায়নি। সেদেশে কার্যত আতঙ্কের প্রহর গুনছেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা। বাংলাদেশে এই পরিস্থিতির আঁচ এসে পড়েছে এপার বাংলাতেও। এদিন জেলবন্দি সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের দ্রুত মুক্তি ও হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বন্ধের দাবি জানিয়ে পেট্রাপোল সীমান্তের কাছে প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। চিন্ময়কৃষ্ণের দাবি জানিয়ে বেলুন ওড়ান শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, প্রতিবাদের সুর এভাবেই ওদেশে পৌঁছবে।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে দ্বিচারিতা বলে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার পেট্রাপোল সীমান্তে হিন্দু সন্ন্যাসীদের অবস্থান মঞ্চে যাওয়ার পথে তিনি বলেন, যখন কোটা বিরোধী আন্দোলন চলছিল তখন মন্তব্য করার সময় প্রধানমন্ত্রীর কথা মনে পড়েনি কেন?
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করাবে ভারত। বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ অর্থনীতি ভারত। ট্রাম্পকে জেতাতে পারে ভারতের হিন্দু সমাজ। রোহিঙ্গাদের বের করবেন তো? ওপারে ইউনুস যা, এপারে মমতা তাই। সময় এসেছে হিন্দুদের শক্তি প্রদর্শনের। জি ২০তে নেতৃত্ব দেয় ভারতবর্ষ। বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ শক্তিশালী রাষ্ট্র ভারতবর্ষ। এই হিন্দু সমাজ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে জেতাতে পারে।”
শুভেন্দু অধিকারীর হুঁশিয়ারি, “ভারত বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্র। সীমান্তে অনেকগুলো শব্দদানব রাখা রয়েছে। দুটি যদি ঘুরিয়ে দেয় না ভারতের বীর সেনা, ছুটে পালিয়ে যাবে মোল্লার দল।”
বাংলার হিন্দুদের এক করার ডাক দিয়ে শুভেন্দু বলেন, “রোহিঙ্গা মুসলমানদের বার করতে হবে। হরিচাঁদ ঠাকুর, গুরুচাঁদ ঠাকুর মতুয়া সমাজ করেছিলেন ইসলামীকরণের বিরুদ্ধে ১৯০৭ সালে। স্বামী প্রণবানন্দ ভারত সেবাশ্রম করেছিলেন হিন্দুত্বের অস্বিত্ব রক্ষার জন্য। বিবেকানন্দ শিকাগোতে গিয়ে বলেছিলেন. তুমি গর্ব করে বলো তুমি হিন্দু। এই মাটিতে সনাতন থাকবে।”
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘বাংলাদেশে কোটা বিরোধী আন্দোলন চলার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, যারা আক্রান্ত হবেন আসুন, আমি তাদের আশ্রয় দেব। তখন প্রধানমন্ত্রীর কথা, পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কথা তাঁর মনে ছিল না। এখন যখন হিন্দুরা আক্রান্ত হচ্ছেন। ব্যাপক জনরোষ তৈরি হয়েছে। ওনার দলের হিন্দু সমর্থকদের মধ্যেও ব্যাপক জনরোষ তৈরি হয়েছে তখন তিনি প্রধানমন্ত্রীকে দায়িত্ব নিতে বলছেন। দায়িত্বটা ওনাকেও নিতে হবে। একই অঙ্গে বিভিন্ন রূপ না দেখিয়ে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে করুক।’
তাঁর দাবি, ‘বাংলাদেশে শান্তি সেনা পাঠানোর কথা তো আমিই প্রথম বলেছিলাম। বাংলাদেশে শান্তি সেনা পাঠিয়ে আক্রান্তদের উদ্ধার করা উচিত। এতে সমস্যার কী আছে?’
ওদিকে বিধানসভায় বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক শংকর ঘোষ বলেন, ‘বিধানসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও প্রতিনিধি থাকে না। তা সত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ে মন্তব্য করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পেরেছেন তাঁর মুসলিম তোষণের নীতির ফলে তাঁর দলেরই বহু হিন্দু নেতা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তাই এই সব বলে তাদের ক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি।’