সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
কলকাতা হাইকোর্টে স্বস্তি পেলেন তৃণমূলের প্রাক্তন যুব নেতা কুন্তল ঘোষ। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কুন্তলের জামিন মঞ্জুর করল আদালত। তবে জামিন মিললেও এই মুহূর্তে জেল মুক্তি হচ্ছে না তাঁর। কারণ, ইডি-র দায়ের করা মামলায় জামিন পেলেও সিবিআই-এর দায়ের করা মামলায় জামিন পাননি কুন্তল। বুধবার বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে জামিন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন কুন্তল। তবে এই মামলা হাইকোর্টে ফিরিয়ে দেয় সর্বোচ্চ আদালত। পাশাপাশি পরামর্শ দেওয়া হয় যাতে কলকাতা হাইকোর্টে একমাসের মধ্যে মামলাটির নিষ্পত্তি হয়।
সেই মতোই বুধবার ছিল শুনানি। তবে ইডি-র মামলায় জামিন পেলেও এখনও জেলমুক্তি ঘটছে না কুন্তলের। এ দিন, একাধিক শর্তসাপেক্ষে কুন্তলের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের নির্দেশ,পাসপোর্ট থাকলে তা জমা রাখতে হবে,নিম্ন আদালতের এলাকা ছাড়তে পারবেন না অভিযুক্ত, তথ্য প্রমাণ নষ্ট করতে পারবেন না, কোনও সাক্ষীকে প্রভাবিত করা যাবে না, একই সঙ্গে ১০ লক্ষ টাকার বন্ডে মিলেছে জামিন।
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ায় কুন্তল ঘোষের। নিয়োগ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত তাপস মণ্ডল দাবি করেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের কাছ থেকে কোটি টাকা তুলেছেন কুন্তল। এরপর ২০২৩ সালের ২১ জানুয়ারি লাগাতার তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন তৃণমূল যুবনেতাকে।
অন্যদিকে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ঝুলে রইলো প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জির জামিন। বুধবার হাইকোর্টে ছিল পার্থর জামিনের মামলার শুনানি। দুই বিচারপতির বেঞ্চে মামলা উঠলে ঐক্যমতে আসতে পারেননি তারা একজন বিচারপতি জামিনের পক্ষে থাকলেও অপর জন ছিলেন জামিনের বিপক্ষে। বিচারপতি অপূর্ব রায় সিংহ প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জামিনের বিরোধীতা করেন। দুই বিচারপতির বেঞ্চের মতো পার্থক্য হওয়ায় মামলাটি রয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবঞ্জানমের হাতে। তৃতীয় বেঞ্চে মামলাটি পাঠাবেন প্রধান বিচারপতি। সেখানেই ঠিক হবে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী জামিন পাবেন কি পাবেন না।
২০২২ সালের জুলাই মাসে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর বান্ধবী ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করে ইডি। সামনে আসে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়টি। তারপর থেকে প্রাথমিক এবং আপার প্রাইমারিতে নিয়োগের দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে শাসক দল ঘনিষ্ট একাধিক ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই এবং ইডি। দুজন তৃণমূল বিধায়কও গ্রেপ্তার হয়। কিন্তু দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থার ব্যার্থতায় জামিন পেয়েছেন অনেকে।