সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
সাতসকালেই মা ফ্লাইওভারে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা। প্রাণে বাঁচানো গেল না দুই বাইক আরোহীকে। উড়ালপুলের উপর দিয়ে বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় ডিভাইডারে ধাক্কা লেগে একেবারে উপর থেকে পড়ে যান দু’জন। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ বলছে চিংড়িঘাটা থেকে সায়েন্স সিটির দিকে আসার সময় সজোরে ডিভাইডারে ধাক্কা মারে বাইকটি। ছিটকে নিচে পড়ে যান বাইকে থাকা দু’জনেই। রক্তে ভেসে যায় এলাকা।
পুলিশ সূত্রে খবর, চিংড়িঘাটা থেকে সোজা সায়েন্স সিটির দিকে আসার সময় সজোরে ডিভাইডারে ধাক্কা মারে মোটরবাইকটি। আর ছিটকে নিচে পড়ে যান মোটরবাইকে থাকা দু’জনেই। রক্তে ভেসে যায় রাস্তা। একে শীত তাতে এত বড় আঘাত লাগায় চিৎকার করতে থাকেন তাঁরা যন্ত্রণায়। সেই চিৎকার, কান্না শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় মানুষজন এবং পুলিশ। তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আসেন এবং কিছুক্ষণ পর মৃত বলে দু’জনকে জানিয়ে দেন। আজ সকালে এই পথ দুর্ঘটনার জেরে মা উড়ালপুল এবং ইএম বাইপাস সংলগ্ন এলাকা কিছুক্ষণ সময়ের জন্য যানজট হয়। তখন নিত্যযাত্রীরা বেশ চাপে পড়ে যান। অন্য রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের চেষ্টা করেন। বাসও থমকে যায়। তখন সেখানে থাকা ট্রাফিক পুলিশ তড়িঘড়ি উদ্যোগ নিয়ে এলাকা যানজটমুক্ত করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মৃত দু’জন মোটরবাইক আরোহীর নাম দানিস আলম (১৮) এবং আনিস রানা (১৯)। তাঁদেরকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচিয়ে তুলতে পারেননি চিকিৎসকরা।
এই পথ দুর্ঘটনায় আহত দু’জনের চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। তবে হাসপাতাল সূত্রে খবর, যখন তাঁদের আনা হয় তখন ঘড়িতে সকাল সাড়ে ৬টা। তার বেশ কিছুক্ষণ আগে ঘটনা ঘটেছিল। অনেকটা সময় বেরিয়ে যায় হাত থেকে। দেরিতে হাসপাতালে আনা হলেও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দুই যুবকই বউবাজার এলাকার বাসিন্দা।
দানিস সকালে তাঁর দাদার মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল। কিন্তু পথে এমন কাণ্ড ঘটবে সেটা কেউ ভাবতে পারেননি। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
আজকের দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যান কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখেন। ঘটনাস্থল থেকেই জানান দ্রুত মা ফ্লাইওভারে দুর্ঘটনা রুখতে ডাক দেওয়া হবে বৈঠকের। তিনি বলেন, ‘টেকনিক্যাল অনেক ইস্যু আছে এই ব্যাপারে। যদি কোনও গাড়ি টার্নিংয়ে দ্রুত গতিতে আসে তাহলে এরকম দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টা কীভাবে আটকানো যায় সে ব্যাপারে আমাদের টিমের সঙ্গে কথা বলে, পরিবহন দফতরের সঙ্গে বসে একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে এটুকু বুঝতে পারছি এই ধরনের দুর্ঘটনা আটকানো সম্ভব। সে ব্যাপারে বৈঠক করে একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে।’