শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
‘আমাদের থিম যেহেতু অপারেশন সিন্দুর, আমাদের থিম অনেকের সহ্য হয়নি। কাল থেকে আমরা চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছি।’ এভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এবং কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক চক্রান্তের অভিযোগ তুললেন সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গা পূজার অন্যতম উদ্যোক্তা তথা বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। ২৪ ঘন্টাও হয়নি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে কলকাতায় এসে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন এই দুর্গাপুজোর। তার মধ্যেই এমন বিস্ফোরক চক্রান্তের অভিযোগ তুলেন সজল ঘোষ। তবে গতকাল অমিত শাহ কলকাতা ছাড়ার কিছুক্ষণ পরেই গভীর রাতে সজল ঘোষ নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে ঠিক একই ধরনের চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে অভিযোগ করেছিলেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় গতকাল সজল ঘোষ লিখেছেন, ‘পুজো বন্ধ করার প্ল্যান চূড়ান্ত। জনমতই একমাত্র পথ।’ এর পাশাপাশি রাজতন্ত্র তৃণমূল নেতা তথা তৃণমূল কাউন্সিলর প্রয়াত প্রদীপ ঘোষের ছেলে বর্তমানে বিজেপির কাউন্সিলর সজল ঘোষের অভিযোগ, ‘যত্র তত্র পুলিশ ব্যারিকেড করে দিয়েছে, মানুষ যেন মণ্ডপে পৌঁছোতে না পারেন, মানুষ শিয়ালদহ স্টেশন অবধি যেতে পারছেন না, অলি গলিতে সর্বত্র ব্যারিকেড, এই পুলিশি জুলুমের মুখে কতক্ষণ পূজো চালাতে পারব জানি না। আরও কিছু পুলিশি নোটিশ আসার অপেক্ষায় আছি l
পাশে থাকুন।’
সজল ঘোষ পুলিশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেও, পুলিশের বক্তব্য ভিন্ন। পুলিশের দাবি, মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং দুর্ঘটনা এড়ানোর উদ্দেশ্যেই ব্যারিকেড দেওয়া হচ্ছে; এর পেছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই। মুচিপাড়া থানা চলতি বছরে ১৪ মে, ১২ জুন, ১৫ জুলাই এবং ৯ সেপ্টেম্বর সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতিকে একাধিক নির্দেশিকা পাঠিয়েছে। এই নির্দেশিকাগুলির মধ্যে রয়েছে, মণ্ডপে ঢোকা ও বেরোনোর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখা, মণ্ডপের গেটের কাছে বা পার্কের পূর্ব প্রান্তে কোনো হকার বা স্টল বসতে না দেওয়া। এছাড়াও, মণ্ডপের ভিতরে বা আশেপাশে কোনও লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো না করা, এবং কমপক্ষে ৬০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো।
নির্দেশে রয়েছে, ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া মোড় থেকে ঢোকার গেট পর্যন্ত কোনও বিজ্ঞাপনের গেট বা কাঠামো রাখা যাবে না। নাগরদোলা বা কোনও জয় রাইড বসানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, আড়াইশো জন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করার কথাও বলা হয়েছে।

এরপরে আজ রীতিমতো প্রেস কনফারেন্স ডেকে সজল ঘোষ প্রকাশ্যে বলেন, ‘আমাদের থিম যেহেতু অপারেশন সিন্দুর, আমাদের থিম অনেকের সহ্য হয়নি। কাল থেকে আমরা চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছি। মাঠের ভিতর রেলিং দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। আমরা সেগুলি সরিয়ে দিই। যারা এর প্রোজেকেশন দেখাচ্ছে তাদের পুলিশ লাইসেন্স, জিএসটি দেখতে চাইছে। আমরা সরকার, কোর্টের সকল নির্দেশ মেনে পুজো করছি। ৯০ বছরের পুজো। এবারের থিম অনেকের সহ্য হয়নি। পুলিশের সঙ্গে ঝগড়া করে পুজো সম্ভব নয়। পুলিশ এই পুজো বন্ধ করার সকল প্রচেষ্টা করছে। পুলিশ চিঠি দিলে পুজো বন্ধ করে দেবো। পুলিশ বলেছে অডিও-ভিজ্যুয়াল চালানো যাবে না। ৪০ ফুটের রাস্তার বন্ধ করে ৪-৫ ফুটের রাস্তা দিয়ে মানুষকে প্রবেশ করানো হচ্ছে।’