সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
দিল্লির হৃদয়স্থলে লালকেল্লা (Red Fort)-র সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। মঙ্গলবার সন্ধ্যেবেলা ব্যস্ত সময়ে ঘটে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা। (Delhi Red Fort Car Blast)—এই কীওয়ার্ডেই এখন গমগম করছে সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। বিস্ফোরণের জেরে মৃত্যু হয়েছে এক জনের, আহত হয়েছেন আরও কয়েক জন। আহতদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেটের ঠিক পাশের পার্কিং লটে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়িতে আচমকা প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশে থাকা আরও কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়ি এবং মোটরবাইকে। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে আতঙ্কে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয় চারপাশে। যাত্রী, পর্যটক, দোকানদার—সবাই প্রাণ বাঁচাতে ছুটে পালান।
দিল্লি দমকল দপ্তর জানিয়েছে, সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিট নাগাদ তারা প্রথম জরুরি ফোন পান। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বহু ইঞ্জিন। টানা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে, তবে তার আগেই একটি গাড়ি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায় এবং পার্কিং লটের বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তদন্তের স্বার্থে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে NIA (National Investigation Agency) এবং NSG (National Security Guard)-এর বিশেষজ্ঞ বাহিনী। Forensic টিমও ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ শুরু করেছে। প্রাথমিক অনুমান—বিস্ফোরণের তীব্রতা অত্যন্ত বেশি ছিল, যা কোনও সাধারণ শর্ট সার্কিট বা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ বলে মনে হচ্ছে না।
এই ঘটনার সঙ্গে সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক (Explosives Seizure)-এর যোগ রয়েছে কি না, তা নিয়েও উঠেছে জোরালো প্রশ্ন। দু’দিন আগেই দিল্লির অদূরে ফরিদাবাদের এক ভাড়াবাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল ৩৬০ কেজি বিস্ফোরক, ডেটোনেটর, টাইমার এবং রিমোট কন্ট্রোল। পুলিশ জানিয়েছিল, এসবের সঙ্গে জইশ ও আনসার ঘাজ়ওয়াত-উল-হিন্দ জঙ্গি সংগঠনের যোগ সন্দেহ করা হচ্ছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রাজধানীর সবচেয়ে সুরক্ষিত এলাকার সামনে এই বিস্ফোরণ—স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়িয়েছে গোটা প্রশাসনে।

তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন— “নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। বিস্ফোরকের রাসায়নিক পরীক্ষা চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
বর্তমানে লালকেল্লা এবং আশপাশে উচ্চ নিরাপত্তা জারি (High Alert in Delhi)। মেট্রো স্টেশন আংশিকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে কিছু সময়ের জন্য।
এই ঘটনা সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ভিডিও, ছবি এবং আতঙ্কিত প্রতিক্রিয়া। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—দিল্লির নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ফাঁক রয়ে গেল কি?